THE FORGOTTEN AIRPORT OF WW 2 পর্ব = ১৪🧧

                 [ ধারাবাহিক ভাবে রচিত ]

ধুবুলিয়া :: THE FORGOTTEN AIRPORT OF
WW 2







✨️ In The Previous Episode :: পারেশন -সি ব্যর্থ হবার পরে জাপান কলকাতা শহরের উপরে এয়ার এটাক করা শুরু করে, গড়ে ওঠে কলকাতার নিজস্ব এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ! জাপানের উপরে পাল্টা আক্রমনের জন্য লর্ড ওয়াভেল একটা স্পেশাল ফোর্স তৈরী করার জন্য আফ্রিকা থেকে ডেকে আনলেন চার্লস উইংগেট কে ! জন্ম হলো চিন্ডিটস নামক একটা স্পেশাল বাহিনীর ! পরিকল্পনা করা হলো ' OPERATION LONGCLOTH '. তারপরে......!

পর্ব = ১৪



হাঁটতে হাটতে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পরে ছিলাম, সম্বিত ফিরলো , পাপ্পু ডাকে , মুখ তুলে তাকালাম , " কি ব্যাপার , হটাৎ এতো চুপচাপ হয়ে গেলে ??? , ' Operation LONGCLOTH ' সম্পর্কে বলো,
রেজাল্ট কি হলো ?

শীতকাল আসছে, এখন থেকেই চারপাশে কেমন একটা হাল্কা শীতের আমেজ পড়তে শুরু করে দিয়েছে ! আকাশে মেঘের ভিতর দিয়ে একটা নরম আলোর ছটা চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে ! হটাৎ করেই যেন আশেপাশের পরিবেশটা ভীষণ সুন্দর ও মনোরম হয়ে উঠেছে !!
ওর কথা শুনে আমি হেসে বললাম,
বলছি , বলছি !!
কিন্তু তার আগে আমাদের চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্যটা একবার ভালো করে দেখ !!
" কি সুন্দর দৃশ্য " !
সবাই মুখ তুলে সামনে তাকালো ,
" সত্যিই 👌
অওসম ভিউ "



আচ্ছা , এবারে ভালো করে দেখে বলতো, ওই যে
উঁচু একটা গোল গোম্বুজ আকৃতির কনস্ট্রাকশন দেখতে পারছিস ?
" হুম " পাচ্ছি তো , তাহলে এটাই কি আমাদের নেক্সট ডেস্টিনেশন ? সবাই উচ্চ স্বরে বলে উঠলো ,
ওদের স্বরে চাপা উত্তেজনার আভাষ !
বললাম " হ্যাঁ " ঠিক বলেছিস , এটাই হল ধুবুলিয়া এয়ারপোর্ট এর সেই পরিত্যাক্ত "সিগনালিং টাওয়ার " . চলো তাড়াতাড়ি যাওয়া যাক !
আমরা দ্রুত পা চালালাম ।



💥 একটা গোলাকৃতির উঁচু টাওয়ার ! প্রথম দর্শনে সমুদ্রের ' লাইট হাউসের ' কথা মনে পরিয়ে দেয় ।। যদিও এখন এর সর্বত্র অ -যত্নর ছাপ স্পষ্ট ! সামনের দিকে টিনের শেড দিয়ে ঘিরে দেওয়ার হয়েছে, ফলে ভীতরে যাবার রাস্তা বন্ধ ।
ভাবছিলাম , এটা তো শুধু একটা ইট বালি সিমেন্ট দিয়ে তৈরী কনস্ট্রাকশন না , এটা একটা জীবন্ত ইতিহাস, একটা ঐতিহ্য !
" যাহ্‌ " পাপ্পূ র মূখ থেকে কিছুটা হতাশার সূর বের হল , "দেখছি, ভিতরে যাবার রাস্তাই নেই ", পুরো জায়গাটাই জবরদখল হয়ে গেছে ।
" হুম " ঠিক । এখন বাইরে থেকে ঘুরে দেখা ছাড়া কোনও উপাই নেই ।



আচ্ছা এখানে কি কাজ করা হতো ? গোপাল নিচু স্বরে জিজ্ঞাসা করলো !
বললাম , দেখ এখানে মূলত " সিগন্যাল লাইট গান " ব্যবহার করে পাইলট দের প্রয়োজনীয় সংকেত প্রদান করা হতো ! ' Signal Light Gun ' জিনিসটা ঠিক কি ?
বন্দুকের মতন দেখতে এটা এমন একটা যন্ত্র যেখানে থেকে লাইট বের হবার বাবোশঠা ছিল । অনেকটা বড় টর্চ লাইটের মতন বলা যায় ।
আমারা সবাই ভালো করে ঘুরে ঘুরে পুরো বিল্ডিংটা দেখলাম ।






ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম , " চল তোদের আরও একটা জিনিস দেখাবো " !
কী জিনিস স্যার ? রজত জিজ্ঞাসা করল .
মুচকি হেসে বললাম , চল না । AIRPORT এর আরও একটা কনস্ট্রাকশন .
আমারা এটাকে বলবো " THE GREAT WALL OF DHUBULIA "😃


তাই নাকি ?? তাহলে তো দেখতেই হবে , সবাই একসাথে ঘাড় কাত করে সম্মতি জাণালো ।
" কিন্তু বাকি গল্পটার কী হবে " ?? পাপ্পূ কিছুটা অস্থির হয়েই বলে ওঠে ।।

আমি হেসে বললাম , " ওটা না হয় হাটতে হাটতে শোনা যাবে " । পাপ্প র মুখ উজ্জ্বল হল , সে হাসি মুখে বলল , " ঠিক আছে চলো তাহলে " ।




আমি আবার লম্বা শ্বাস নিয়ে আবার বলতে শুরু করলাম......
১৯৪৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী ব্রিটিশ , বার্মিজ এবং গুর্খাদের নিয়ে গঠিত উইংগেট এর ৩ হাজার CHINDITS FORCE শুরু করলো তাদের প্রথম অভিযান " OPERATION LONGCLOTH " ।
Their Tactics is Hit & Run Behind the Enemy Lines and Their Goal is Striking Rail Lines ,River Boats , Bridges & Stop all Japanese's Supplies From Rangoon City toMandalay Town.

আচ্ছা ব্রিটিশ , বার্মিজ তো বুঝলাম কিন্তু এই গুর্খাদের ম্যাটার টা কি ? মানে বলতে চাইছি এরা কারা ? আর এখানে বা আসলো কি ভাবে ?? এই বিষয় টা যদি একটু বল ভাল হয় ।
হেসে বললাম , " খুব ভাল প্রশ্ন করেছিস , তাহলে শোন " Gurkha or Gorkha are An Ancient Tribal Race in Indian Subcontinent , actually They Belong to The Kingdom Of Nepal .
এখন প্রশ্ন হচ্ছে , এদের সাথে ব্রিটিশদের কি সম্পর্ক আর কেন তারা ব্রিটিশের পক্ষনিয়ে বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করছিল ?
" হম " ঠিক তাই , সবাই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো ।



টা জানতে হলে আমদের টাইম ট্রাভেল করে একটু পিছিয়ে , চলে যেতে হবে সেই সময় যখন ভারতবর্ষ শাসন করছে ' ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কাম্পানি ' ! আর ১৮১৪ সালে এই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে তৎকালীন নেপাল রাজার সীমানা সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হলো, যার পরিনামে শুরু হলো 'এংলো -নেপালিস ' যুদ্ধ ! এই যুদ্ধ শেষ হলো ১৮১৬ সালে সগউলি সন্ধির মাধ্যমে ।
দেখ, ব্রিটিশরা বরাবর বুদ্ধিমান জাতি , আর তাদের একটা বড় গুণ ছিল , কাকে দিয়ে কোন কাজ করানো যাব, অর্থাৎ কে কোন কাজের উপযুক্ত এটা তারা খুবই তাড়াতাড়ি বুঝতে পারতো ! তারা বুঝে গেলো যে, নেপালি- গুর্খারা জন্মগত ভাবে ভীষণ সাহসী, ডাকাবুকো এবং লড়াকু একটা জাতী । এরা মানুষ হিসাবে ও অতন্ত নির্ভরযোগ্য । এদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি !


সুতরাং তখনই তারা ঠিক করে ফেলে , কোম্পানির সেনাবাহিনিতে গুর্খাদের নিয়োগ করা হবে । সেই থেকেই এই ট্রাডিশন শুরু !

তোরা আরো শুনলে অবাক হবি যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ২ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি গুর্খা সৈনিক ব্রিটিশদের হয়ে বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই করেছিল । এরা ছিল ব্রিটিশদের একটা বড় শক্তি ।
আরো মজার কথা কি জানিস, এখনো প্ৰতি বছর নিয়ম করে নেপাল থেকে ৩০০/৪০০ জন গুর্খা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর চাকরী তে যুক্ত হয় !


এখনো ?? সবার মুখে বিস্ময় ।। 😮
হ্যা, ! "এখনো " আর শুধু তাই নয়,
ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ছাড়াও গুর্খাদের আলাদা রেজিমেন্ট ইন্ডিয়ান আর্মি, সিঙ্গাপুর আর্মি, ব্রুনেই সুলতানের সেনাবাহিনীতে রয়েছে ! 'ভাবতে পারছিস ? ব্যাপার টা !!





যাইহোক, তারপরে শোন, চিন্ডিটসদের
অপারেশন তো শুরু হলো, কিন্তু তোরা তো ভাল মতন জানিস , বার্মাদেশের ভূপ্রকৃতি , আবহাওয়া যে কোনো মিলিটারি অপারেশনের চূড়ান্ত অননুকূল !
এখানকার স্টেপ মাউন্টেন, ঘন জঙ্গল, নদী উপত্যাকা পুরো বার্মাকে একটা আলাদা দূভেদো অঞ্চলে পরিণত করে রেখেছিলো ! ম্যাপ ভালো করে লক্ষ করলে দেখবি ইন্ডিয়া থেকে বর্ডার ক্রস করে বার্মা দেশের অভন্তরে ঢুকতে হলে দুটো নদী, চিন্দুইন এবং ইরাওরদী পার করতে হয়. এটা একটা বড়ো সমস্যা !
এছাড়া, বার্মার জঙ্গলে হিংশ্র জীব-জন্তু ছাড়াও ম্যালেরিয়া, ডাইরিয়া ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সম্ভাবনা ব্যাপক !
তাহলে হিসাব দাঁড়াচ্ছে চিন্ডিটসদের একটা নয়,
দূ-দুটো শত্রু জঙ্গল ও জাপানি !!





🗺️ চার্লস উইংগেটের পরিকল্পনা ছিলো চিন্ডিটস গ্রাউন্ড ফোর্সকে প্লেন থেকে এয়ার ড্রপেরে মধ্যমে অর্থাৎ আগের থেকে মার্কিং করা নিদিষ্ট জায়গায় প্লেন থেকে খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া হবে এবং চিন্ডিটস বাহিনী দিনে লুকিয়ে থাকবে এবং রাতে অপারেশন করবে ! এই সিক্রেট অপারেশনের সফলতা পুরোটাই নির্ভরশীল ছিলো এই এয়ার ড্রপ করা সাপ্লাই লাইনের উপরে !
ঠিক হলো এয়ার সাপ্লাই এর মূল কেন্দ্র হবে কলকাতা আর আগরতলা !




Dropping  Essentials  From  Aero plane



Japanize   Rail  Supply  Line  in  Burma .


রিকল্পনা অনুযায়ী,
১৩ ফেব্রুয়ারী চিন্ডিটস ফোর্স চিন্দুইন নদী অতিক্রম করে এবং মিটকিং থেকে মানডালয় পর্যন্ত জাপানী রেল সাপ্লাই লাইনের ১00 বেশি জায়গা ধ্বংস করে দেয় ! প্রাথমিক সাফল্যর পরে
উইংগেট চেয়ে ছিলেন চিন্ডিটসরা আরো দূর অগ্রসর হয়ে ইরাওয়ারডি নদী উপতাকা অতিক্রম করুক ! কিন্ত ভারতের বর্ডার থেকে ১৫০০/২০০০ মাইল ভিতরে এয়ারড্রপ করে সাপ্লাই দেওয়া টেকনিক্যালি ইম্পসিবল !
ইতিমধ্যে ইম্পেরিয়াল জাপানী আর্মি ও চিন্ডিটস সম্পর্কে জানতে পেরে গেছে, তারাও একটা বিহত্তর কাউন্টার এটাকের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে !
এইরূপ পরিস্থিতিতে আর অপারেশন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলো না, তাই শেষ পর্যন্ত এপ্রিল মাসের শেষেদিকে উইংগেট ' অপারেশন লংক্লথ ' প্রত্যাহারের আদেশ দেন !


ফেরার সময় Chindits বাহিনী কিন্তু ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পরে !!
কি রকম সমস্যা ? সবাই এক সাথে বলে ওঠে ।।
বলছি....... ...,।

ক্রমশঃ

[ বাকিটা পরের পর্বে }
এটা একটা ধারাবাহিক রচনা , তাই পুরো গল্পটি শোনার জন্য সকল পর্ব গুলো দেখুন ।।

All writings and other content here are entirely the author's own., It may not be reproduced or copied in any form without the written permission of the owner. 
as per Section 14 of the Copyright Act of 1957.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফাস্ট ফুড, চাউমিন বা ন্যুডলস। Health is Your Wealth. 🥣

🌍🌏 ধুবুলিয়া ঃঃ THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR2 [ পর্ব =১৫ ]