THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR 2 " [ ১২ তম পর্ব ]
ধুবুলিয়া ::: THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR 2 "
[ ১২ তম পর্ব ]
কলম্বো আক্রমণের পুরো দায়িত্ব অর্পিত ছিলো ইম্পেরিয়াল নেভির ' Vice Admiral Chuichi Nagumo ' এর উপরে !
তার কাছে এবং ব্রিটিশদের কাছে ও এটা স্পষ্ট , যে শ্রীলংকা তথা ভারত মহাসাগর ও বঙ্গ -পো সাগরের মতন এতো বিরাট বড়ো এরিয়া জুড়ে ইমপ্রেরিয়াল জাপানি নেভি সঙ্গে সামনা সামনি লড়াই করার ক্ষমতা সেই সময়ে ব্রিটিশ রয়েল নেভির নেই . আর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার মতন পযাপ্ত সময় ও তাদের হাতে নেই !! অর্থাৎ ক্ষমতা ও সময় দুটোই অল্প !
তাই ব্রিটিশদের একমাত্র লক্ষ হয় দাঁড়ায় I. J. N নজর থেকে নিজেদের লুকিয়ে রাখা, যাতে যত দুর সম্ভব কম ক্ষতি হয় . আর Chuichi Nagumo লক্ষ হয় কুইক এন্ড সারপ্রাইস এটাক ! যাতে ম্যাক্সিমাম ক্ষতি করা যায় ! মূল টার্গেট অবশ্যই, ইন্ডিয়ান ওসেন ' ইস্টার্ন ফ্লিট ' কে পুরো পুরি ড্যামেজ করে দেওয়া !
✨️ এই সময় ' ইস্টার্ন ফ্লিট ' এর দায়িত্বে ছিলেন ব্রিটিশ Vice Admiral Sir James Somerville. আচ্ছা, দাদা !! এই ' Fleet ' কথাটা বার বার শুনছি, এর মানেটা ঠিক কি ?
বলতে পারিস, " A Group Of Warships That Moves Together Under One Command Or One Company "
যা বলছিলাম, এই পরিস্থিতিতে স্যার সমের্ভিল প্রথমেই তার 'ইন্ডিয়ান ওসেন ফ্লিট ' এর বেশিরভাগ জাহাজ কে শ্রীলংকা থেকে সরিয়ে দিলেন অনেক দূরে একটা সিক্রেট বন্দরে , যার কোড নাম ছিলো ' Port -T ' বা HMS Haitian .
সিক্রেট পোর্ট ???
এটা আবার কি রকম ?? সবার মুখে বিস্ময় !!
হ্যা ঠিক শুনেছিস, " সিক্রেট পোর্ট " !!
এই ব্যাপার টা ঠিক কি ??
আর ঠিক কোথায় অবস্থিত ছিলো এটা ?
জাপান নেভি কি সত্যিই এই " সিক্রেট পোর্ট " টা কখনো খুঁজে পাইনি ???
সবাই একসাথে জিজ্ঞাসা করে উঠলো !!
বলছি বলছি !!
হেসে বললাম, তাহলে মন দিয়ে শোন,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশরা অনেক গুলো সিক্রেট মিলিটারি ঘাঁটি তৈরী করে ছিলো, আর যাতে শত্রু পক্ষ যাতে এগুলো খুঁজে না পায়, তার জন্য এদের সবার গোপন কোড নাম দিয়েছিলো.
যেমন ধর, ভারতের কোচিন বন্দরের কাছে ব্রিটিশ রা একটা কৃত্রিম দ্বীপ তৈরী করে, যেখানে গোপন নেভাল বেস, এয়ারস্ট্রিপ, মিলিটারি ট্রিনিং ক্যাম্প তৈরী করেছিলো.
তৎকালীন ভারতের বড়লাট লর্ড উইললিডন নামে এই দ্বীপের নাম রাখা হয় ' Willingdon আইল্যান্ড ' .
কিন্তু যুদ্ধের সময়ে এর সিক্রেট কোড নাম দেওয়া হয়ে ছিলো , HMS Garuda '.
জানিস তো, " This Is the First & Largest Man made Artificial Island Of India ".
জানিস তো, 'ভেম্বনদ লেক ' থেকে মাটি তুলে এই কৃত্রিম দ্বীপ তৈরী করা হয়েছিলো . আচ্ছা !!! তবে কি এখনো এটা আছে ?
নিশ্চই আছে !!! শুধু আছে বললে ভুল হবে,
এই দ্বীপ এখন ভারতের একটা গুরুত্ব পূর্ণ জায়গা বলা যায় . এটা ইন্ডিয়ান নেভির সাউথের্ন কম্যান্ড এর গুরুত্বপূর্ণ 'বেস স্টেশন ' !
শুধু তাই নয়, এছাড়া এখানে কোচি কাস্টম হাউস , প্লান্ট কোয়ার্টাইন স্টেশন, সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফিশারিজ টেকনোলজি আরো অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ডিপার্টমেন্ট এর অফিস অবস্থিত !!
এতো কিছু আছে এখানে !!
হম , মোট চারটে ব্রিজের দ্বারা ভারতের মূল ভুখন্ডের সাথে এটা যুক্ত !!
💥 আচ্ছা, এবারে আমাদের মূল গল্পে আসা যাক , এই সিক্রেট বন্দর " Port -T " আসলে ছিলো শ্রীলংকা থেকে ৯৭০ K. M দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত মালদ্বীপের বন্দর "Addu Atoll '. তোরা নিশ্চই জানিস মালদ্বীপ আসলে অনেক গুলো ছোটো ছোটো দ্বীপের সমন্বয় গঠিত একটা অর্চিপালাগো !
ফলে প্রকৃতিগত ভাবেই এটা একটা Natural Hiding Place. আর এখানে দীর্ঘ সময় লুকিয়ে থাকা খুবই সহজ !!
তাই বুদ্ধি করেই রয়েল নেভি এখানে একটা সিক্রেট বেস তৈরী করে ! এছাড়াও এখানে ' সিক্রেট এয়ার স্ট্রিপ, ফ্লাইং বোট বেস, অয়েল ট্যাংক রিসার্ভার ইত্যাদি তৈরী করা হয়েছিলো ! মজার কথা কি জানিস, জাপান ইন্টেলেজন্স ডিপার্টমেন্ট এর কাছে এই সিক্রেট ' Port -T ' খানিকটা ইনফরমেশন ছিলো !
কিন্তু এক্সজাক্ট লোকেশন জানা ছিলো না !!
তবুও জাপান একটা সাবমারিন পাঠিয়েছিল এই সিক্রেট পোর্ট এর সন্ধানে ! কিন্তু দুর্ভাগ্যবসতো তারা এটা খুঁজে পাইনি !!
ভাব, যদি জাপান এই সিক্রেট পোর্ট খুঁজে বার করতে পরতো, তাহলে হয়তো ইতিহাস অন্য রকমের হতে পারতো !!
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ এপ্রিল, কলম্বোর উপরে জাপানের প্রথম এয়ার এট্যাক শুরু হয়. প্রায় ১২৫ জাপানি ফাইটার প্লেন এই আক্রমনে অংশ নেয়.
এই আক্রমনে R. A. F প্রায় ২৭ প্লেন ধ্বংস হয়. অন্য দিকে জাপানের ধ্বংস হয় মাত্র ৫ টি প্লেন. এর পর ৬ এপ্রিল, ৯ এপ্রিল বার বার জাপানের আক্রমন হতেই থাকে !
কিন্তু যেহেতু মূল জাহাজ গুলো আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল তাই , ক্ষয় ক্ষতির পরিমানে ছিলো তুলনা মূলক ভাবে অনেক কম.
এই সব বিচার করে এটাকে টেম্পোরারি " ব্রিটিশ ভিক্টরি "
বলা যায়. আর হয়তো এই ভাবে সমুদ্র পথে ব্যর্থ হয়েই জাপান স্থলপথে ডেডলি অপারেশন ' U- Go ' এর পরিকল্পনা নেয় , এটাও বলতে পারিস !
ইতিমধ্যে আমরা ধুবুলিয়া এয়ারপোর্টের A. T. C টাওয়ার কাছে পৌঁছে গেছি ! বললাম, দেখ সামনে এই যে পরিত্যক্ত বিল্ডিং দেখতে পারছিস, এটাই ছিলো একসময় এই এয়ারপোর্টের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার বা A. T. C ! সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত জায়গা .
এটা ছাড়া এয়ারপোর্ট অচল. কিন্তু দেখ, আজকে কি রকম শান্ত ও নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে. একেই বোধহয় বলা যায় কালের ফের ! আসলে সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলে যায়. ভাবতে পারছিস কি বিরাট কর্ম কাণ্ডের সাক্ষী এই বিল্ডিং. কিন্তু আজ এটা সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ও অবহেলিত .
ইউনাইটেড কিংডম কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহার করা প্রায় সব কিছুই যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করে রেখেছে ! আমরাও কি ওদের মতন পারতাম না। এই সব জিনিস গুলোকে সুন্দর করে বাঁচিয়ে রাখতে, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম এই গুলো জানতে পারত, বুঝতে পারত।
এটাই পার্থক্য ওদের সাথে আমাদের, বুঝলি !!
সত্যি ই দাদা, এই সব ইতিহাস যত শুনছি , জানছি ততই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে ।।
আচ্ছা, সিগন্যালিং টাওয়ারটা কোথায় ?
দেখবো , দেখবো , ওটা দেখতে হলে আরও একটু হাঁটতে হবে আমাদের ।
ক্রমশঃ
[ বাকিটা পরের পর্বে ]
আমাদের এই ধারাবাহিক লেখা গুলি আপনাদের কেমন লাগছে , অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানান ।
পরবর্তী লেখা গুলো পরার জন্য এই ব্লগ টি দেখতে থাকুন ।।







Darunn detailing
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ 🙏
মুছুন