FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR 2 { পর্ব = ১৩ }

ধুবুলিয়া ::: THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR 2

{ পর্ব = ১৩ }
IN THE PREVIOUS EPISODE ::: [আমরা সবাই মিলে ধুবুলিয়া এয়ারপোর্টের A. T. C Tower এবং Signaling Tower দেখতে যাচ্ছি , রাস্তায় জাপানের অপারেশন- সি গল্প শোনা হয়েছে আর ATC Tower দেখার পরে Signaling Tower দেখতে যাচ্ছি , তারপরে .....





বললাম, চল তাহলে হাঁটতে হাঁটতে বাকি বাকি গল্প শোনা যাক, হ্যা নিশ্চই !! সবাই একসাথে বলে উঠলো ! ঠিক আছে তাহলে মন দিয়ে শোন , জাপানের Operations- C ব্যর্থ হলো , অপারেশন তার আসল যে টার্গেট পূরণ করতে সক্ষম হয় নি, British Indian Ocean Fleet ধ্বংস করতে পারেনি ,আসলে খুঁজেও পায় নি ! এই জাহাজ গুলোকে অনেক আগেই সিক্রেট বন্দরে [ Port -T ] সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কি তাই তো , আমি বললাম ।


হ্যা, ঠিক তাই !!

এবারে একটা প্রশ্ন তোদের মনে আসা স্বাভাবিক, এই যে এতো সব সেনা অপারেশন গুলোর কথা আমরা শুনছি সেগুলো শুধু জাপানের পক্ষ থেকেই বারবার করা হয়েছিল, তাহলে কি ব্রিটিশ শক্তির কি কোনো ভূমিকা ছিলো না ?
যদি তাই হয় তাহলে জাপান যুদ্ধে পরাজিত হলো কেন ?
কি তাই তো ??
হুম, ঠিক বলেছো দাদা, আমার মনেও এই কথাটা অনেক সময় ধরে ঘুরছে, পাপ্পু মুখ ঘুরিয়ে বলে উঠলো!
সত্যি সত্যি ব্রিটিশরা কি করেছিল ?
শুধু পালানো আর লুকিয়ে থাকা ছাড়া ?

হেসে বললাম, না রে, ব্যাপারটা পুরোপুরি সেরকম নয় ! আসলে কি জানিস , যুদ্ধের প্রথম দিকে প্রস্তুতি ব্রিটিশদের একদম ভাল ছিলো না, তাদুপরি , তারা জাপানি সেনার ক্ষমতা কে ছোট করেই দেখেছিল ! অন্য দিকে জাপান পুরোপুরি কঠোর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শক্তিশালী বাহিনী তৈরী করে ফেলেছিলো ! আবার ভেবে দেখ এই একেই সময় ইউরোপে মাটিতে ব্রিটিশদের লড়তে হচ্ছিলো প্রবল শক্তিশালী জার্মানির সাথে ! ফলে যুদ্ধে তাদের অবস্থা ছিলো যথেষ্ট খারাপ. তবে তার মধ্যেও তারা যতদূর সম্ভব আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো,

এরকম কিছু ঘটনা আজকে বলি শোন ,
অপারেশন সি ব্যর্থ হবার পরে ইম্পেরিয়াল জাপানি এয়ার ফোর্স কিছু সময়ের জন্য বড় আক্রমন বন্ধ করে , ছোটো ছোট এয়ার এটাক করতে শুরু করে । ভারতের নিদিষ্ট লক্ষ বস্তু বা জায়গা কে কেন্দ্র করে.


তাদের লক্ষ ছিল দুটো, এক, শত্রু কে ব্যস্ত করে সবসময় চাপের মধ্যে রাখা এবং দুই , পরবর্তী বড়ো যুদ্ধের জন্য নিজেদের সম্পূর্ণ তৈরি করে ফেলা .

তাদের এই টার্গেট গুলো মধ্যে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলো আমাদের শহর, কলকাতা ! যদিও এর অনেক আগেই ১৯১১ সালেই ব্রিটিশ সরকার রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লী সরিয়ে নিয়েছিলো , তা সত্ত্বেও ব্রিটিশ শাসন কালে কলকাতা শহরের একটা আলাদা ইতিহ্য বা সন্মান বরাবর বজায় ছিলো. তাছারা, কলকাতা ছিলো সমগ্র নর্থ - ইস্ট ইন্ডিয়ার প্রশাসনিক এবং সামরিক সদর দপ্তর .
সুতরাং কলকাতায় আঘাত মানে ব্রিটিশ গভঃ সরাসরি চ্যালেঞ্জ মুখে ফেলে দেওয়া. যেটুকু বা সন্মান বা ইমেজ তখনও টিকে আছে সেটাও ধুলিসাৎ করে ফেলা ! এই সময় ভারতের অভ্যন্তরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ব্রিটিশ শাসকদের অনুকূলে ছিলো না !

গান্ধীজি এর নেতৃত্বে জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের ধাক্কা দিতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে একটা বৃহৎ আন্দোলনের, যেটা পরে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে রূপ নেবে ! মানে একদম Do Or Die সিচুয়েশন , ঘরে বাইরে দুই দিকেই !
আর ঠিক এই সময়ে Imperial Japanese Army Air Force [ IAAF ] এটাক শুরু হয় , যাকে বলে গোদের উপরে বিষ ফোঁড়া !

JAPANESE AIR ATTACK ON CALCUTTA ::

শুরু হয় ২০ ডিসেম্বর ১৯৪২, তারপরে বার বার কলকাতার উপরে আক্রমণ হতেই থাকে. যেমন ১৯৪৩ জানুয়ারি মাস খিদিরপুর ডক আক্রান্ত হয়, ময়দানেও জাপানী বোম্ব পরে.
জানিস তো শুধু মাত্র খিদিরপুর ডকেই কয়েক মিনিটের মধ্যে জাপান ৭০ বেশি বোম ফেলে ছিল, ক্ষয় ক্ষতির পরিমান ছিলো মারাত্মক, ডক এর একটা বড়ো অংশ পুরো ধ্বংস হয়ে যায় ! ৫০০ বেশি মানুষ হতাহত হয় !
আর পুরো ঘটনাটাই ঘটে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে ! তাহলে বুঝতেই পারছিস, কিরকম ভয়ঙ্কর !
চারিদিকে শুধু আতঙ্ক, আর গুজব !
জাপানী এয়ার ফোর্স এটাক বেশিরভাগ সময় রাতের দিকে করত , তাই সন্ধ্যার পর থেকে পুরো কলকাতা শহর অন্ধকার হয়ে যেতো,
যাকে বলা হত ' ব্ল্যাক আউট ' !
খাবার দাবার বা অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় জিনিস সন্ধে নামার আগেই সংগ্রহ করে নিতে হতো ! সন্ধের পর থেকে কলকাতা শহর হয়ে যেত একটা শুনশান প্রেতপুরীর মতন মনে !

BRITISH ACTION ::
ব্রিটিশ সরকার ও বসেছিল না , সুতরাং শুরু হয়ে
গেলো কলকাতা বাঁচানোর লড়াই, তৈরী করা হলো , Special Night Defense Squadron, RAF 89. দের জন্য নর্থ আফ্রিকা থেকে আনা হলো Bristol Beaufigher নাইট ফাইটার এয়ারক্র্যাফট ! দমদমে রাতারাতি একটা নতুন এয়ারপোর্ট বানানো হল !
কলকাতায় বসানো হলো স্পেশাল এয়ারবোন ইন্টারসেপ্ট রাডার , যেগুলো নাইট ভিশন জন্য হইলি এফেক্টিভ !
এই সব ছাড়াও ইংল্যান্ড থেকে আনা হলো একটা স্পেশাল বেলুন স্কোয়ার্ডরন !
কি বললে, ' বেলুন ' ????
হ্যা, ঠিকই শুনেছিস , বেলুন স্কোয়ার্ডরন !!!
এই ব্যাপার ঠিক কিরকম ?
হম, ব্যাপারটা হচ্ছে, বৃহৎ আকৃতির বেলুন এর মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যা স ভরে সেগুলো কে শক্ত স্টিলের কেবল তার দিয়ে বেঁধে রাখা হতো !
এই কেবল তার গুলো খুব শক্ত হলেও খালি চোখে দূর থেকে দেখা যেত না ,
ফলে হাই স্পিড ফাইট প্লেনের পাইলটরা এগুলো লক্ষ্য করতে পরতো না, যার ফলে প্লেন গুলো এই সব ওয়্যার গুলো তে ধাক্কা দিয়ে দিত, আর আগুন ধরে যেতো, ক্র্যাশ করে যেতো !


যুদ্ধে বেলুন এর ব্যবহার প্রথম শুরু হয় আমেরিকান সিভিল ওয়ারে , দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জার্মান প্লেন অ্যাটাক থেকে লন্ডন শহরকে বাঁচানোর জন্য ব্রিটেন এই বেলুনের ব্যাপক ব্যবহার শুরু করে । শুধু তাই নয় তারা রীতিমতো প্রশিক্ষন প্রাপ্ত বেলুন রেজিমেন্ট তৈরী করে ফেলে !
এই রকমের প্রশিক্ষিত বেলুন বাহিনীর একটা স্কোয়ার্ডরন আনানো হয় লন্ডন থেকে ।
বিশ্বকর্মা পুজোর সময় কলকাতার আকাশে দিকে তাকালে যেমন বিভিন্ন রঙ বে রঙের ঘুড়ি দেখতে পাওয়া যায় , ঠিক তেমন ভাবে তখন কলকাতা র আকাশে উড়ত বড় বড় বেলুন , ভাবতে পারছিস কি আসাধারন লাগতো আকাশের দিকে তাকালে ।


জানিস তো , যেদিন খিদিরপুরে [২৩ জানুয়ারী ১৯৪৩ ] সবচেয়ে বড় অ্যাটাক হলো সেইদিন এই বেলুন স্কোয়ার্ডরন ওখানে রেস্ট নিচ্ছিলো ছিলো, ব্যোমবিং সময়ে এর বেশিরভাগ সদস্য নিরাপদ জায়গা আশ্রয় নিতে পারলেও,
তিন জন পারেনি, তারা মারা যায় বোমার আঘাতে , এদের কলকাতা ভবানীপুরে কবর দেওয়া হয় , ইচ্ছে ছিল পরিস্থিতি ভাল হবার পরে গ্রেভিয়ার্ডগুলো ইংল্যান্ড এ ফিরিয়ে নেওয়া হবে, কিন্তু সেটা আর হয় নি ।
মানে বলছো, ভাবানিপুরে গেলে এই তিন জনের কবর দেখা যাবে ??
হ্যা, ঠিক তাই ।। এখনো ভবানীপুরের সিমেট্রি তে এই তিনজনের TOMB সংরক্ষণ করে রাখা আছে !


MAJOR GENERAL CHARLES WINGATE & THE CHINDITS :

ত্যি !!!! এই সব ক

আচ্ছা , এই রকম ঘটনার কি আরো উদাহরণ আছে ??

হম , অনেক আছে ! আজকে এরকম একজন সাহসী ও বুদ্ধিমান মানুষের কথা বলবো যার নাম, Major General Orde Charles Wingate. The British Army Officer Who Create THE CHINDIT. " চিন্ডিট " সেটা আবার কি ? রজত নিচু স্বরে জানতে চাইলো !

Chindits হচ্ছে একটা Special Operational Force যেমন ধর , এখনকার N. S. G.
মানে কমান্ডো বাহিনী ? বলতে পারিস অনেকটা ,
Actually Its a Long Range Penetration Petrol Group যাদের ট্রেনড করা হয়েছিল গেরিলা টাইপ স্পেশাল অপরাশনের জন্য !
It Was the Brain Child Of Charles Wingate.
CHARLES     WINGATE
🌈 খুব ইন্টারস্টিং ম্যাটার, আমাদের একটু পুরো ব্যাপার টা একটু খুলে বলো, সবাই একসাথে বলে উঠলো ! নিশ্চয়ই , ১৯৪৩ সালের প্রথম দিকে যখন জাপান কলকাতা সহ বিভিন্ন লক্ষ বস্তুর উপরে টার্গেট করে বিমান হানা চালাছে , ব্রিটিশদের নাভিশ্বাস ওঠার মতন অবস্থা ! ঠিক এই রকম পরিস্থিতিতে ভারতের Command in Chief , ওয়াভেল , Charles Wingate কে ভারতে আসার আহ্বান জানলেন ! যিনি আফ্রিকার "Gideon Force " নামে একটা স্পেশাল বাহিনী তৈরী করে ইতালির বিরুদ্ধে সফল হয়েছেন ! ওয়াভেল ভারতে ও এমন একটা স্পেশাল বাহিনী তৈরি করতে চান, যারা গেরিলা লড়াই দ্বারা ইম্পেরিয়াল জাপানিস আর্মি্র ক্ষতি করবে, জাপানের উপরে পাল্টা চাপ সৃষ্টি করবে । মনে রাখতে হবে আমরা যে সময়ের কথা বলছি, তখন কিন্তু এই সব স্পেশাল কমান্ডো এই কনসেপ্টটা একদম প্রাথমিক পর্যায়ে .


যাইহোক ওয়েভলের আহ্বানে Wingate ভারতের মনিপুরে আসলেন, তিনি Indian , Gorkha And British সহ প্রায় ৩০০০ হাজার সৈন্যদের একসাথে ট্রেনড করে তৈরী করলেন একটা স্পেশাল ফোর্স , " চিন্ডিটস ", এই Chindits নাম টা দিলেন, Mythological Burmese Lion ' The chinthe ' এর অনুকরনে ! যেটা হচ্ছে হাফ লায়ন এবং হাফ ইগল !

Wingates Objective Was Attack Rail Lines and Other Vital Communication Center In Burma and Destroy All Supply Line Of Imperial Japanese Army.




তিনি ইন্ডিয়ান বর্ডার ক্রস করে বার্মায় ঢুকে জাপানি বাহিনী কে আক্রমণ করার জন্য একটা মাস্টার পিস প্ল্যান বানালেন যার কোড নাম দিলেন " OPERATION LONG CLOTH " . তিনি কি সফল হলেছিলেন ??

সবাই একসাথে প্রশ্ন করলো !! বলছি ...... !!!!


OPERATION LONG CLOTH
ক্রমশ
[ বাকিটা পরের পর্বে ]


আমাদের এই লেখা গুলো কেমন লাগছে কমেন্ট করে জানান ।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফাস্ট ফুড, চাউমিন বা ন্যুডলস। Health is Your Wealth. 🥣

🌍🌏 ধুবুলিয়া ঃঃ THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR2 [ পর্ব =১৫ ]

THE FORGOTTEN AIRPORT OF WW 2 পর্ব = ১৪🧧