TERRACOTTA WARRIORS , The Legacy Of The First Empire Of China. [ প্রথম পর্ব ] ​

সভ্যাতার ক্রম বিবর্তনের ধারায় চৈনিক জাতীর ভুমিকা অনুস

 🧱 TERRACOTTA WARRIORS ,

The Legacy Of The First Empire Of China.

[ প্রথম পর্ব ]
তিন দিন পরপর বৃষ্টি হবার পরে আজ পরিষ্কার আকাশ,  
টানা তিনদিন বাড়িতে বসে থেকে থেকে বোর ফিল করছে রিমঝিম !
যদিও বৃষ্টি তার খুবই প্রিয়, বৃষ্টির ফোটা মাটিতে পরে পরিপাশে একটা যে মিষ্টি মেঠো গন্ধ তৈরী হয়, তার একটা আলাদা সন্মোহনি ক্ষমতা আছে, যেটা তার খুবই পছন্দের ! বাড়ীর সামনের লম্বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ক্লাবের মাঠের দিকে তাকালো সে, কাল পর্যন্ত মাঠে জল টইটুম্বুর ছিলো, আজকে অবস্থা অনেকটাই ভালো !
    দোকানপাট ও. আস্তে আস্তে খুলেছে ! হটাৎ করেই তার খেয়াল হলো আজকে তো রবিবার, ছুটির দিন ! মানে ভিক্টর দা বাড়িতে আছে, জমিয়ে আড্ডা দেবার ইচ্ছে মনের মধ্যে জমাট বেঁধে ছিলো এবারে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ধরলো তাকে !
দ্রুত পোশাক পরিবর্তন করে নিচে নেমে আসলো, মা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত, মাথা ঘুরিয়ে তাকিয়ে বলে, "মা একটু ভিক্টরদার বাড়িতে যাবো ".  
মুখ তুলে তাকালেন, চোখাচখি হতেই সম্মতির ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালেন তিনি ! স্নিকার্স টা পায়ে গলিয়ে সদর দরজা খুলে বাড়ীর বাগানে পা দেবার সাথে সাথেই টের পেলো বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে অদ্ভুত একটা মিষ্টি ভেজা মাটির গন্ধ !
" আহঃ " দুই ঠোঁট চেপে বুক ভরা নিঃস্বাস নিলো সে ! এই গন্ধটা তার ভীষণ প্ৰিয় !  


সামনের দিকে পা বাড়ালো সে তাদের বাড়ীর সামনে কিছুটা জায়গায় এখনো জল, কাঁদা জমা হয়ে আছে, এটা প্রত্যাশিত , মনে মনে ভাবলো সে ! ঠিক করলো ক্লাবের পাশের বড়ো রাস্তা দিয়েই ভিক্টর দার বাড়িতে যাবে ! এই রাস্তা টা একটু ঘুরপথ হলেও জল জমার সম্ভাবনা কম. প্রায় দশ মিনিট হাঁটার পরে একটু মোর নিতেই ভিক্টর দার বাড়ীর গেটের সামনে দাঁড়ালো সে !

নকশা করা লোহার গেট ঠেলে ভিতরে ঢুকেই সে থমকে গেলো কয়েক মুহূর্তের জন্য ! ভিক্টর দার ঘরের জানলা দিয়ে হাল্কা ভলিউম ক্লাসিকাল সংগীত ভেসে আসছে, যদিও তার কাছে এটা কোনো অবাক করার মতন ঘটনা নয়, ভিক্টরদা ওয়েস্টার্ন ক্লাসিকাল মিউজিকের একজন বড়ো ভক্ত।

কিন্তু এই মিউজিকের আওয়াজ ছাপিয়ে ঘরের ভিতর থেকে শোনা যাচ্ছে অর্কের ও নিশোর উচ্চ স্বরে হাসির শব্দ । তারমানে ওরা আগেই পৌঁছে গেছে, কিন্তু তাকে বলার প্রয়োজন করে নি! তীব্র একটা অভিমান তার গলার কাছে জমাট বেঁধে শক্ত হলো !  
একটু থমকে দাঁড়ালো কয়েক . মুহর্তে র জন্য, তারপরে দাঁত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরে মনে মনে বললো , "না " আজকে এর একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে !

💢 বাড়িটা চমৎকার, অনেকটাই বাংলো বাড়ীর মতন, সামনে বড়ো গাড়ি বারান্দা , বড়ো বড়ো ফেঞ্চ কাটিং জানলা আর খুব সুন্দর একটা বাগান. কি নেই সেই বাগানে, ফুল ও ফলের গাছের লম্বা ডালপালা পুরো বাড়িটাকে একটা আলাদা রকমের সৌন্দর্য প্রদান করেছে ! জেটা এক নজরে যে কারও মানসপটে স্থান করে নেবে !  
অবসর সময় গার্ডেনিংগ ভিক্টরদার অন্যতম একটা হবি , অন্যতম বলার কারণ ভিক্টরদার হবির লিস্ট অনেক লম্বা !

   

বড়ো বড়ো পা ফেলে বিশাল কাঠের দরজা খুলেঘরের ভিতরে উঁকি দিলো সে ! ভিক্টর দার ঘরের. সাজ সজ্জা আর পরিবেশ এক ে বারেই আলাদা, সর্বত্র রুচিশীল সৃজনশীলতার ছাপ স্পষ্ট ! যেনো একটা আলাদা জগৎ , ঘর মাঝখানের বড়ো রাউন্ড টেবিলে পর পর শন, অর্ক ও নিশো বস ে আছে, সবার মুখে হাসি, উচ্ছাস স্পষ্ট ! মনে হচ্ছে ভীষণ মজার কথা আলোচনা হচ্ছে ! ঘরের পশ্চিম দিকের জানলা ঘেঁষা রকিং চেয়ার ভিক্টর দা বসে দোল খাচ্ছে, হাতে ধুমায়িত কফি মগ ! সে ঘরে প্রবেশ করার সাথেই সবাই একসাথে উচ্ছসিত কন্ঠে বলে ওঠে, " এই তো, তোর কথাই হচ্ছিলো, দীর্ঘ জীবি ভবো !

"ও তাই বুঝি " রিমঝিম ভুরু কুঁচকে সবার দিকে তাকালো, ভাবটা এমন যে, ব্যাপার টা তার একদম পছন্দ হলো না ! অভিমানের সুরে বলে ওঠে, তাহল আমাকে একবার ডাকার প্রয়োজন বুঝি তোদের হলো না ! ব্যাপার টা খুবই বাজে !


রিমঝিম , খুব ভালো সময় এসেছিস ভিক্টর দা মুখ তুলে মৃদু বলে গলায় বলে উঠলো . রিমঝিম ধীর পায়ে এগিয়ে এস সামনের ফাঁকা সোফায় পা তুলে আরাম করে বসে ! অর্ক তার দিক ে প্রেস্ট্রি দিয়ে তৈরি লাল কেক ভর্তি প্লেট এগিয়ে দেয় ! এই নে, মুখে দিয়ে দেখ, কেমন বানিয়েছে কাকিমা ! একটা সুস্বাদু গন্ধ তার নাকে এসে লাগল ! ঝটপট একটুকরো কেক হাতে নিয়ে খেতে শুরু করলো, সত্যিই কাকিমা মানে, ভিক্টর দার মা একজন অসাধারণ গুণী মানুষ ! তার এই রকম অনেক কিছুই ভিক্টর দার মধ্যেও বর্তমান ! কিছুক্ষনের মধ্যেই সে আবিষ্কার করলো মাথায় ভিতরে জমা হয়ে থাকা অভিমান গুলো যেনো বাস্পিভূত হয়ে উড়ে গেছে !

সে মুখ তুলে তাকিয়ে বলে , কি আলোচনা হচ্ছিলো জানতে পারি কি ?
অর্ক রহস্যময় কণ্ঠে বলে, " পাতাল রাজার সৈন্য ",
এই দিকে তাকিয়ে দেখ ,সে ঘরের মাঝের গোল টেবিলের দিকে ইঙ্গিত করে আর হি হি করে দাঁত বার করে. হাসে ! সে দিকে চোখ কুঁচকে তাকিয়ে রিমঝিম লক্ষ করে টেবিলের উপরে খুবই সুন্দর মাটির তৈরী একটা পুরানো একটা মূর্তি ! মূর্তিটা মনে হচ্ছে ভিক্টর দার নতুন কালেকশন , পুরানো এন্টিক জিনিসের সংগ্রহের শখ বিষয়ে রিমঝিম ভালো মতন জানে , কিছু দিন আগেই এ রকম একটা অদ্ভুত আকৃতির টিবেটিয়ান মুখোশ সে দেখেছে !    

ভিক্টর দার   বাড়িতে টেবিলের  ওপরে থাকা  মূর্তি

    একটু ভাবলো , কারণ এটাও তার জানা যে কোনো ছোটো বিষয় বাড়িয়ে রহস্যময় করে উপভোগ করাটা অর্কর একটা পুরানো অভ্যাস ! তাই সে ওর কথাতে আমল না দিয়ে সন্দেহর দৃষ্টিতে দূ শন ও নিশোর দিকে তাকালো ! তারাও মিটিমিটি হাসি মুখে মাথা নেড়ে সায় দিলো ! ভুরু কুঁচকে রিমঝিম কয়েক মূহর্ত তাকিয়ে থাকলো মূর্তিটার দিকে, কিছুটা অদ্ভুত যে বেশ পুরানো একটা পোড়া মাটির মূর্তি এটা বোঝাই যাচ্ছে ! গায়ের রং গাঢ় সোনালী, এটা তাকে মুগ্ধ করলো, সব চেয়ে অদ্ভুত এর মুখের অভিবক্তি হটাৎ করে দেখলে জীবন্ত মনে হয় ! এরকম আকৃতির মাটির মূর্তি সে আগে কখনো দেখেনি, চোখ সরিয়ে নিয়ে সে ভিক্টর দার দিকে সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকালো ! ভিক্টর দার মুখে হাসি ফুটে উঠলো, সে হাতের ফাঁকা কফি মগটা নিচে নামিয়ে রেখে বললো, চিনের সম্রাট কিন- শি- হুয়াং এর টেরাকোটা আর্মি, একটা মিনি ভার্সন ! অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো কালেকশনের, বলে চুপ করে গেলো !


রহস্যর গন্ধ পেলো রিমঝিম, সে নড়েচড়ে বসলো, " টেরাকোটা আর্মি " জিনিসটা কি ? এর কি কোনো হিস্ট্রিরিকাল স্টোরি আছে ? যেমন কোনো স্পেশাল ফোর্স টাইপ ? তার ভিতরে একটা চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে ! নিশো বলে, " পাতাল রাজার সৈন্য "The Mummy' :: Tomb Of The Dragon Empire মুভি টা দেখিস নি ?

 " হুম " দেখেছি তো ,আবার ভিক্টরদার দিকে তাকালো রিমঝিম ,যেন আরো বেশি কিছু শোনার অপেক্ষায় আছে ।


বাইরের জানাল দিকে তাকিয়ে ভিক্টরদা বললো,  " তাহলে শোন, এই অদ্ভুত দেখতে মূর্তির আশ্চর্য গল্প ,

যদিও এর শুরুটা হয়েছিল খুবই সাদামাটা ভাবে, চিন দেশের একটা ছোট্ট অখ্যাত গ্রাম জিয়াঙ সেখানে জলের জন্য কুয়ো খোঁড়া হচ্ছিলো, সময় টা হলো ১৯৭৪ সালের ২৯ মার্চ । কিন্ত অনেক চেষ্টার পরেও জলের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না, চারদিন খোদাই পরে ও শুধু লাল মাটি উঠেছে, খনন কারীহতাশ , তারা কাজ বন্ধ কথা ভাবা শুরু করেছে. এমন অবস্থায় পঞ্চম দিনে সম্পূর্ণ অপ্রোত্যাশিতভাবে মাটির তলায় পাওয়া গেলো এক গোপন সুড়ঙ্গ পথ যেখান থেকে উঠে আসলো একজন পূর্ণ দৈঘ্যর টেরাকোটা যোদ্ধা। তার চোখ মুখে জ্যান্ত ভাব, যেন সে যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ! তারপরে একে একে আরো অনেক যোদ্ধা , তাঁদের প্রচুর অস্ত্র -সস্ত্র বেরোতে লাগলো !

 ঘটনার তাৎপর্য স্বরূপে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হলো ! যেন কোনো মায়াবী জাদু টোনার বাপার । খবর ছড়িয়ে পরতে বেশি সময় নিল না। শুরু হল আর বেশি খোঁড়া খুড়ি ,আর অনেক মূর্তি বেরতে লাগলো । ঘটনার রহসময়তা নিয়ে সবাই চিন্তিত হয়ে পরলেন । খবর দ্রুত ছড়িয়ে পরল ।

 

  কিন্তু কেন এই অখ্যাত গ্রামের মাটির তলায় এই সব রহসময় মূর্তি চাপা পরে আছে, আর কে ,কেন এই কাজ করেছে ? মূর্তি গুলোর নির্মাণ কৌশল বা এরকম অদ্ভুত কেন ? কত বছর ধরে এই গুলো মাটির তলায় এই ভাবে পরে রয়েছে ? এরা কারা ?? কেনই বা বছরের পর বছর ধরে এদের মাটির তলায় চাপা দেয়ে রাখা হয়েছে ? এই সব প্রশ্নগুলোর উত্তর তখনো পাওয়া বাকি ?

ক্রমশ । বাকিটা পরের পর্বে ।

টি একটা অপ্রতাশিত ভাবে খুজে পয়াওয়া ঐতিহাসিক আবিস্কারকে কেন্দ্র করে লেখা গল্প । যে আবিস্কার এক লহমায় পাল্টে দিয়েছিল অনেক ভাবনার, হদিস দিয়েছিল জানার নতুন দিগন্তের , আলো ফেলেছিল ইতিহাসের চাপা পরে থাকা এক নতুন অধ্যায়ের ।

এখানে বর্ণিত ঐতিহাসিক ঘটনাটা সত্য , বাকি ঘটনা ও চরিত্র সব গুলোই লেখকের কল্পনায় সৃষ্ট সম্পূর্ণ কাল্পনিক ।।

ধন্যবাদ ।।

 All writings here are entirely the author's own., It may not be reproduced or copied in any form without the written permission of the owner. 

as per Section 14 of the Copyright Act of 1957.

 

মাটি খুঁড়ে পাওয়া সৈন্যসামন্ত ।

 






মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফাস্ট ফুড, চাউমিন বা ন্যুডলস। Health is Your Wealth. 🥣

🌍🌏 ধুবুলিয়া ঃঃ THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR2 [ পর্ব =১৫ ]

THE FORGOTTEN AIRPORT OF WW 2 পর্ব = ১৪🧧