TERRACOTTA WARRIORS , Legacy Of The First Empire Of China [ শেষ পর্ব ]
THE TERRACOTTA WARRIORS , Legacy Of The First Empire Of China
শেষ পর্ব ঘরের রাউন্ড টেবিলের উপরেরাখা মূর্তিটার উপরে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো রিমঝিম, এক ঝলক দেখে নিয়ে আবার মনোযোগ দিলো ভিক্টরদার দিকে ! ঘরের মধ্যে সবাই একেবারে চুপচাপ !
কথিত আছে পরকালে তার ব্যবহারের জন্য এই সমাধিসৌধে নাকি বিপুল পরিমানে ধন-সম্পদ লুকিয়ে রাখা হয় ! কিন্তু এই ঘটনার সাথে মাটির তলার পাওয়া মূর্তির কি সম্পর্ক ?" বোকার মতন বলে ফেললো অর্ক !
ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো ভিক্টরদা, তারপরে কিছুটা উঠে সোজা হয়ে তার চেয়ারে বসলো,আর বললো " দুটো ঘটনাই একে ওপরের সাথে সম্পর্কিত ".তবে আগে , সে দিন মাটির তলা উঠে আসা মূর্তি গুলোর ঘটনাটা আগে শোনা যাক !" উমম "...... ওরা সবাই একসাথে মাথা নেড়ে সাই দিলো !
একটু চুপ থেকে ভিক্টরদা বলতে শুরু করলো , মাটি খুঁড়ে এই সব মূর্তি গুলো পাওয়া খবর সংবাদপত্র, টেলিভিশনে প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই সমগ্র দেশে ব্যাপক শোরগল সৃষ্টি হ লো. ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্তের কৌতুহলী মানুষের আগমন ঘটতে শুরু হলো এই ছোট্ট জিয়াঙ গ্রামে ! তাঁদের সামলানো মুশকিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ! এদিকে দেশের শিক্ষিত বুদ্ধিমান সম্প্রদায় মানুষের দাবি এই ঘটনার সঠিক তথ্য জানাতে হবে. সরকারের টনক নড়লো, জনগণের চাপে শেষপর্যন্ত চিন সরকার এই ভু -গর্ভস্ত সেনা
বাহিনীর রহস্য সমাধান করতে উদ্যোগী হলেন ! এবারে সার্বিক ভাবে খোঁড়া-খুঁড়ির দ্বায়িত্ব দেওয়া হলো প্রফেশনাল সরকারি প্রত্নতত্ত দলের উপরে ! এবারে খোঁড়াখুঁড়ি আবিষ্কারে বিশালত্বে ও গুরুত্ব এ চমকে উঠলো পুরাতত্ত বিশ্ব !
উৎসুক কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো নিশো ! তার দিকে তাকিয়ে ভিক্টর দা বললো অনেক কিছু, মোট তিনটি বিশাল আলাদা আলাদা পিট পাওয়া গেলো, পিট মানে চেম্বার ! এই প্রতিটা চেম্বার আবার আলাদা-আলাদা লম্বা করিডরে বিভক্ত, করিডর গুলো প্রতিটা প্রায় ৩ মিটারের বেশি চওড়া ! প্রথম পিটে এরকম ১১ করিডর আছে ! এখান থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে এই এক একটি পিট কতটা বিশাল আকৃতির ! আয়তনে প্রায় দুটো ফুটবল খেলার মাঠের সমান [ ৬৪ মি দৈঘ্য আর ২৩০ মি. প্রস্থ ]
কিছুটা চমকে উঠে জিজ্ঞাসা করলো শন !
দেখ, চিন দেশের ইতিহাসে সম্রাট শি- হুয়াং আজীবন স্বরণীয় কারণ তিনিই প্রথম রাজা যিনি সামগ্র চিনদেশ কে একত্রিত করতে পেরেছিলেন, তিনি আনুমানিক খিষ্ট্র পূর্ব ২৬০ থেকে ২১০ মৃত্যুর আগে প্রযন্ত চিনকে শাসন করে গেছেন ! জীবিত অবস্থায় এই মানুষটা ছিলেন অভূত খামখেয়ালি ধরণের.
চীনের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত যে বৃহৎ প্রাচীর, যাকে আমরা ' THE GREAT WALL OF CH INA ' বলে জানি সেটা কিন্তু তার রাজত্ব কালেই তৈরী করা হয় ! এই খামখেয়ালি রাজা মৃত্যুর পরেও নিজেকে বিলাসী সম্রাট রূপে প্রজাদের মধ্যে দেখতে চেয়েছিলেন ! ইচ্ছে ছিলো মৃত্যুর পরে পরকালেও রাজা হয়ে রাজত্ব করার. লি পাহাড়ে তার সমাধিসৌধ এখনো একটা 'আনসল্ভ মিস্ট্রি '!!!
কিরকম ??
মুখ তুলে জানতে চায় রিমঝিম !!ভিক্টরদা বলে, নেক্রোপোলিস মানে হলো একটা সম্পূর্ণ রাজ্কীয় সমাধি ক্ষেত্র, লি পাহাড়ের গোপন জায়গায় শি-হুয়াং এর এই নেক্রোপোলিসে রাজদরবার, অফিস, আস্থাবল, এমনকি রাজার প্ৰিয় বাগান নাকি অবিকল সত্যির মতন করে রাখা আছে !
প্রায় ৩৮ বছর সময় লেগেছিলো এটা সম্পূর্ণ করতে ! এটা নিয়ে প্রচুর রোমাঞ্চকর গল্প এখনো বাতাসে ভাসে,. যেমন ধর , এখানে পরকালে রাজার ব্যবহারের জন্য বিপুল পরিমানে ধন-সম্পদ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল ! আর এই সম্পদের নাগাল যাতে কেউ না পায় সেই জন্য এই নেক্রোপোলিসের বিভিন্ন জায়গায় বানানো হয়েছে প্রচুর মৃত্যু ফাঁদ , যেগুলো আজ ও সক্রিয় !
এছাড়া আছে বিষাক্ত পারদের বড়ো বড়ো নদী ,যেগুলো ঘিরে আছে সম্রাটের কবর কে !
THE SECRET TOMB OF QIN-SHI- HUANG
যাকে বলা হয় চিনদেশের প্রথম ঐতিহাসিক, এর লিখিত বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, এই নেক্রোপলিসের উচ্চত্তা নাকি ১১৪ ফিট এবং এর ভিতরে সত্যি কারের মুক্ত দিয়ে দিয়ে চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র ও ব্রোঞ্জ দিয়ে পাহাড় পর্বত তৈরী করা আছে ! এছাড়া আছে একাধিক সবুজ মূল্যবান পাথর, সোনা, আরো অনেক দামি দামি জিনিস ! সমাধিক্ষেত্রটি তৈরী হবার পরে এটাকে পুরোপুরি ঘাস ও গাছ পালা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় যাতে কেউ বাইরে থেকে চিনতে না পারে !
ভিক্টরদা একটু হেসে বলে দেখ, রাজা শি-হুয়াং ছিলেন বিপুল সম্পদের অধিকারী আবার কিছুটা খামখেয়ালি, সুতরাং অসম্ভব বলা যায় না ! একটা ছোট্ট পরিসংখ্যন দি , টেরাকতা আর্মির যে মূর্তিগুলো আবিষ্কার হয়েছে সেগুলোর এক একটার বর্তমান মূল্য ৪.৫ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার.
আর মোট আবিষ্কার হয়েছে ৮ হাজার. তাহলে হিসাবে হচ্ছে. ৮০০০×৪.৫ = ৩৬ বিলিয়ন ডলার ! এর সাথে আছে ১৩০টা রথ, ৫২০টি ঘোড়া, আর ১০০টা অস্ত্র, সব মিলিয়ে যার মূল্য ৫ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার অর্থাৎ ভারতীয় টাকায় 37, 25, 70, 25, 00, 000. 00 !
অর্ক চোখ গোল করে বললো !" হমম " তাহলে বোঝাই যাচ্ছে কি বিপুল মূল্য হতে পারে ঐ পুরো নেক্রোপলিসের ! নিশো আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করে , আজ ও কি এই সমাধী ক্ষেত্রে কেউ ঢুকতে পারেনি ?" না, এর নাগাল এখন পযন্ত কেউ পায় নি "খুব ছোট্ট ভাবে উত্তর দিলো ভিক্টরদা !"আচ্ছা সরকারি তরফ থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছে না কেন ?" প্রথম প্রথম সরকারি দিকে ব্যাপারে ভাবা হয়েছিল , পরে অনেক গুলো কারণে বাতিল করা হয়,
যেমন, পাহাড়ের উপরে নেক্রোপোলিসের জায়গাটা এতটা দুর্গম যে খনন কার্য করা খুবই কষ্টকর, দ্বিতীয়ত হয়তো খনন করতে গেলে প্রাচীন এই স্মৃতিসৌধ এর ক্ষতি হতে পারে, এছাড়া এর সাথে ভিতরের বিপজনক মৃত্যু ফাঁদ ব্যাপারটা আছেই. যে পারদের নদীর কথা উল্লেখ আছে তার সত্যতা বিচার করা না গেলেও জিয়াঙ গ্ৰামের মাটিতে কিন্তু পারদের খোঁজ কিন্তু পাওয়া গেছে, তাই এই ব্যাপারটা পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়াও যাচ্ছে না !
"একটাকথা সব সময় মাথায় রাখবি এই বিপুলা পৃথিবীর কতটাই আমরা জানি.......... জানা হয় নি বেশিরভাগটাই !
হয়তো ভবিষ্যতে কখনো না কখনো এই রহস্য এর সমাধান হবে .............!!!ঠিক, ঠিক ........সবাই. একসাথে মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানালো !!!!
এখানে বর্ণিত ঐতিহাসিক ঘটনাটা সত্য , বাকি ঘটনা ও চরিত্র সব গুলোই লেখকের কল্পনায় সৃষ্ট সম্পূর্ণ কাল্পনিক ।।
ধন্যবাদ ।। ।। সমাপ্ত ।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন