Mona Lisa :: Mystery & Much more 🧭 [ দ্বিতীয় পর্ব] www.Facebook.com/Subhra3

🖼️ The Mona Lisa :: Mystery & Much more

                           [ দ্বিতীয়   পর্ব]

  ⛳️ KYRA ::

The Art Gallery

3.45 P. M.

 

গ্যালারির জানালা দিয়ে বিকেলের নির্মল বাতাসের ঝাপটা এসে লাগছে ওদের গায়ে. গ্যালারির ডানদিকের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে দেখা যাচ্ছে রাস্তায় যানবাহন গুলো দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে ! এখন বিকেলে আর্ট গ্যালারিতে আবার লোকজনের আগমন শুরু হয়ে গেছে ! মূল করিডর থেকে দর্শকদের আওয়াজ প্রতিধ্বনি ওদের কানে আসছে ! তাদের কণ্ঠস্বরে বিস্ময় ও আবেগ বহিঃপ্রকাশ স্পষ্ট !

গ্যালারির দুদিকের দেয়ালে বিভিন্ন চিত্রশিল্পকলা গুলো যেন নিষ্পাপ ভাবে ওদের দিকে চেয়ে রয়েছে ! ওদের প্রায় সব ছবি গুলোই দেখা হয়ে গেছে, ভিক্টরদা অনেকক্ষণ ধরেই একটা ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে !

এবারে সবাইকে বাইরের যাবার জন্য ইশারা করলো !

বড়ো ঘোরানো সিঁড়ির দিয়ে গ্যালারির পিছন দিকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথেই ফেব্রুয়ারী মাসের বিকেলের ঠান্ডা নির্মল বাতাসের ঝাপটা আবার ওদের মুখে এসে লাগলো !

বাহ ।। দারুন ।। ওরা একসাথে বলে উঠলো ।

এই গ্যালারির পিছন দিকটা বেশ নির্জন ,

একটু দূরেই দুটো পুকুর পাশাপাশি অবস্থান করছে ! এর জন্য ই এই জায়গায় নাম জোড়া পুকুর ! গ্যালারি থেকে বেশ চওড়া একটা পাথুরে পথ সোজা পুকুরের দিকে চলে গেছে ! ওরা এই পথ দিয়ে পুকুরের দিকে এগিয়ে গেলো !

পুকুরের চারপাশে লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা, সুন্দর পরিষ্কার জল টলমল করছে. জলের দিকে তাকিয়ে ভিক্টরদা বললো, লিওনার্দোর জন্ম হয় ১৪৫২ সালে, ভিঞ্চি গ্রাম থেকে দুই-তিন কিলোমিটার দূরে অঙ্কিয়ানো এর একটা ভগ্ন খামার বাড়িতে ! জানিস তো এই খামার বাড়িটা আজও আছে তবে এখন আর ভগ্ন নেই, সরকারি ভাবে সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হয়েছে !

অঙ্কিয়ানো সেই ভগ্ন খামার বাড়ি

যেটা এখন সরকারি ভাবে সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হয়েছে !

১৫০৫ থেকে ১৫১৫ সালের মধ্যে লিওনার্দো তিনটি বিরাট বড়ো মাপের চিত্রশিল্প আমাদের উপহার দিয়েছিলেন, তারমধ্যে মোনালিসা হলো অন্যতম একটা.

🚩 লিওনার্দো তো সারা জীবনে অনেক ছবি এঁকেছিলেন , যারমধ্যে অনেক গুলো বেশ খ্যাতি পেয়েছিলো !

কিন্তু এই মোনালিসা চিত্রটা এতো বিখ্যাত হবার কারণ কি ?

ভিক্টরদা কিছুক্ষণ চুপ থাকলো , তারপরে বললো

এর অনেক গুলো কারণ হতে পারে, যেমন

লিওনার্দো ব্যাক্তিগত ভাবে ভীষণ গোপন ও রহস্যময় প্রকৃতির মানুষ ছিলেন !

তিনি তার পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতা সবই কিছুই তিনি তার ব্যাক্তিগত নোটবুকে লিখে রাখতে পছন্দ করতেন , এগুলোর বেশিরভাগ ই পরবর্তী সময় খুঁজে পাওয়া গেছে বিভিন্ন আকারে !

আজকে দিনে এই সবগুলো ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর বিভিন্ন বড়ো বড়ো সংগ্রহশালায় ।।

আবার কোথায় কোথাও কোনো ব্যাক্তিগত সংগ্রহে , এই সব নোট বই গুলোতে তিঁনি তার সব পরিকল্পনা ও সৃষ্টিকর্মের কথা লিখে গেলেও,

কিন্তু কোথাও এ তিনি এই ছবি বিষয়ে একটাও কথা উল্লেখ করেন নি !

এম কি এই ছবিতে যে মহিলা আছেন তিনি কে সেটাও তিনি কোথাও কখনো বলে যান নি !

এগুলোই মোনালিসা নিয়ে রহস্যকে আরো ঘনীভূত করেছে.

🀄 কে এই মোনালিসা ?

সরকারি দলিল পত্র ও সমসাময়িক বিভিন্ন দোস্তবেজ থেকে জানা যায় যে, মিলানের ধনী রেশম ব্যবসাহী ফ্রাসেস্ক ডেল জিওকোন্ডার পত্নী ছিলেন এই মোনালিসা ঘোরারদিনি জিওকোনডা !

এই রেশম ব্যাবসাহী লিওনার্দো কে তার পত্নীর ছবি আঁকার কন্টাক্ট দিয়েছিলেন !

কিন্তু এখানে সঙ্গত ভাবে প্রশ্ন উঠে আসে তাহলে লিওনার্দো এই ছবিটি কেন তাদের বিক্রি করলেন না !

এখান থেকেই আবার নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে !

যেমন কারো মতে মোনালিসা কোন জলজ্যান্ত মহিলা নয়,

এটা লিওনার্দো কল্পনা থেকে তৈরী একটা আদর্শ নারীর প্রতিকৃতি, বাস্তবে এরকম কেউ কখনোই ছিলো না !

আবার কারো মতে মোনালিসা কোনো মহিলার ছবি না,

এটি লিওনার্দো দা-ভিঞ্চির নিজের আত্মপ্রকৃতি, দাঁড়ি-গোঁফ বাদ দিয়ে নিজেক নারী রূপে কল্পনা করার ফল !

অনেকে আবার মোনালিসাকে ইতালীর নবজাগরণের নারীত্ববাদের প্রতীক হিসাবে দেখেন.

দা সিস্ক্রেট কোড #

সাম্প্রতিক কালে সিলভানো ভিন্সেটি নামে এক ইতালিয়ান রিসার্চার দাবি করেছেন, মোনালিসা ছবিতে দা -ভিঞ্চি একটা সিক্রেট কোড ম্যাসেজ দিয়ে গেছেন, যেটা তিনি উদ্ধার করতে পেরেছেন!

তিনি বলেছেন মোনালিসার বাম চোখের মধ্যে লেটার S ডান চোখের মধ্যে L এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ৭২ সংখ্যাটা লুকিয়ে আছে এবং এটা একটা সিক্রেট কোড মেসেজ !

মানে রহস্য এর উপরে রহস্য !!

🌈 ভিঞ্চি মোনালিসা চিত্রটি এঁকেছিলেন পপ্লাই কাঠের টুকরোর উপরে মোনালিসা পিছনে আছে একটা কুয়াশাচ্ছন্ন পাথুরে পটভূমি

এবং ঘোলাটে ভাব ' পেইন্টিং এর ভাষায় যাকে বলা হয় ফুমাতো ।।

" ফুমাতো স্টাইল " এছাড়া এই ছবিটিতে তিঁনি ব্যবহার করেছিলেন

" এরিয়াল পারসক্টিভ " অর্থাৎ পাখির দৃষ্টিকোন. দিয়ে দেখা ছবি, যেটা আগে কেউ কখনো ব্যবহার করেনি ! পরবর্তী সময় আরো একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী রাফায়েল,

ভিঞ্চির মোনালিসা অনুকরণে আরো একটা মোনালিসা ছবি আঁকেন !

চিত্রশিল্পী রাফায়েল, আর তার আঁকা মোনালিসা ।।

🖼️ আর্ক্ দু কারুজেল

এবং

মিউজি দু লুভর ::

আর্ক্ দূ কারুজেল পারিসের শহরের একটা ভীষণ গুরত্বপূর্ণ ও হৈ-চৈ পূর্ণ জায়গা ! এখানেই আছে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত জাদুঘর মিউজি দা-লুভর বা লুভের মিউজিয়াম ! ইউরোপ মহাদেশের সব চেয়ে বড়ো বিল্ডিং এই লুভের মিউজিয়াম ! মিউজিয়ামের পুরো এলাকাটা প্রায় ৫ কিলোমিটার বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তীত !এর ভিতরে আছে ৬৫৩০০ টি শিল্পকর্ম,   তাই এটা ভালো করে ঘুরে দেখতে গেলে ৩৫ দিনের বেশি সময় লাগবে !

লুভের মিউজিয়ামের সবচেয়ে বড়ো কক্ষে ' গ্রান্ড গ্যালারি তে শিল্পপ্রেমিদের ভিড়

এই মিউজিয়ামের সবচেয়ে বড়ো কক্ষে যাকে বলা হয় ' গ্রান্ড গ্যালারি ' এর ভিতরে একট মাঝামাঝি জায়গায়, আলাদা আয়তক্ষেত্র আকৃতির কক্ষে যাকে বলা হয় " সল দে -এতাত " এর ভিতরেই মোনালিসা চিত্রটি রাখা আছে ।

এই ঘড়ের উত্তর-পশ্চিম দেয়ালে ।

" সল দে -এতাত " কক্ষে বুলেটফ্রুফ কাঁচের পিছনে টাঙানো Monalisa!

ছবিটি তিনইঞ্চি পুরু বুলেটফ্রুফ কাঁচের পিছনে টাঙানো আছে ! একটা ছবির জন্য এতো প্রটেকশন ? হুম, বিভিন্ন সময় মোনালিসার উপরে নেমে এসেছে বিভিন্ন রকমের সমস্যা , তাই এই কড়াকড়ি ব্যবস্থা ।।

🧧 সব চেয়ে বড়ো সমস্যা , যখন এটা লুভের থেকে চুরি হয়ে যায় [ ১৯১১ সালেস্ট মাসের ২১ অগাস্ত ] তারপরে দুই বছর ধরে খুঁজেও এর কোন সন্ধান পাওয়া যায় না !

ইন্টারপোল থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের পুলিশ, গোয়েন্দা তন্নতন্ন করে খুঁজেও কিছুই পায়না !

Monalisa চুরি হবার খবর পেপারে বেরিয়েছে ।।

তারপরে যখন সবাই প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছে তখনি আবার কিছুটা আশ্চর্য জনক ভাবেই খোঁজ পাওয়া গেলো এর.

ক্রমশঃ

[ বাকিটা শেষ পর্বে ]

🌈 সময়টা হল ১৯১১ সালের অগাস্ট মাস, পারিসের লুভের মিউজিয়াম থেকে হটাৎ করে হারিয়ে গেল লিওনার্দো দা-ভিঞ্চির আঁকা মাস্টারপিস ছবি MONA LISA .

MONA LISA র এই আকস্মিক হারিয়ে যাবার সারা বিশ্বে তুমুল আলোড়ন ও তোলপাড় সৃষ্টি করলো ।
কারণ এ তো শুধু একটা ছবি নয় ,
এটা একটা ইতিহাস, একটা উন্মাদনা ও আবেগ ।

শেষ পর্যন্ত কী ভাবে ঊদ্বার হলো MONO LISA ??

কে , বা কারা ছিল এই পুরো ঘটনার পিছনে ??

এইসব নিয়ে ই আমাদের আজকের এই গল্প ।।

ভালো লাগলে কম্মেণ্ট করে জানাবেন ।

 

ধন্যবাদান্তে

AUTHORITY OF  

RAINBOW SUBHRO SCAPBOOK .

 

 

 

www.Facebook.com/Subhra3

     

https://youtu.be/uKRZE393ECQ