কোলকাতার গল্প 𝐂𝐡𝐚𝐫𝐧𝐨𝐤 𝐌𝐚𝐮𝐬𝐨𝐥𝐞𝐮𝐦.


পুরোনো কোলকাতার গল্প


𝐂𝐡𝐚𝐫𝐧𝐨𝐤 𝐌𝐚𝐮𝐬𝐨𝐥𝐞𝐮𝐦, 𝐤𝐨𝐥𝐤𝐚𝐭𝐚.
একটা সমাধি আর কিছু গল্প।



  "𝐑𝐨𝐦𝐞 𝐰𝐚𝐬 𝐧𝐨𝐭 𝐛𝐮𝐢𝐥𝐝 𝐢𝐧 𝐚 𝐝𝐚𝐲, 𝐍𝐨𝐭 𝐂𝐮𝐥𝐜𝐮𝐭𝐭𝐚."
রোম এক দিনে তৈরী হয়নি, হয়নি আমাদের কলকাতাও। 
রোমের গল্পের সাথে যেমন জড়িরে আছে রেমুলাস ও রেমাসের নাম , তেমনি কলকাতার সাথে যিনি , তাঁকে সবাই চিনি, তার কথা জানি। তিনি চার্ণক, জব চার্ণক ।  
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক নিম্নবর্গীয় করনিক থেকে কলকাতার প্রাণপুরুষ, বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়ে ওঠার গল্প।




  হুগলী থেকে সুতানুতি

১৬৮৬ সাল, চার্ণক তখন হুগলীর
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কুঠির অধ্যক্ষ । সেবার প্রবল বন্যায় হুগলীতে কোম্পানির গুদাম, কার্যালয় সব ভেঙে পড়লো । চার্ণক আদেশ দিলেন নতুন করে বিল্ডিং নির্মাণ করার ।  ঠিক হল, এবারে তৈরী হবে শক্তপোক্ত দ্বিতল ভবন। কিন্তু কোম্পানি দ্বিতল বিল্ডিং, মোগল নিরাপত্তার জন্য বিপতজনক। মোঘল শাসকের আদেশে হুগলীর দেশীয় শ্রমিকরা নির্মাণকার্য বন্ধ করে দিলেন , কাজ বন্ধ । অনেক চেষ্টা করেও কিছু করা সম্ভব হল না ।



পরাজিত, অপমানিত চার্ণক হুগলী ছাড়তে বাধ্য হলেন, যাবার সময় গঙ্গাবক্ষ থেকে আতসকাঁচের সাহায্যে সূর্যরশ্মি দিয়ে গঙ্গার তীরে মোঘলদের সব খড়ের গুদামে আগুন ধরিয়ে দিলেন । 
চার্ণক আসলেন সুতানটি।  তখন গভীর জঙ্গলে পরিপূর্ণ। 
একদিকে আজকের শিয়ালদহ অন্য দিকে হাওড়া মাঝে চোরঙ্গী, কালীঘাট ভবানীপুর বিস্তৃণ ভূভাগ, জলাজমি,খাঁদ ও গভীর অরণ্য। খাঁদে কুমির, জঙ্গলে বাঘ আর ডাঙ্গায় ভয়ানক ডাকাত।








চার্ণক বুঝলেন এখানে ব্যবসা করে বড় কিছু করতে হলে, এ দেশের মানুষের সাহায্য প্রয়োজন। এজন্য তাঁকে রপ্ত হতে হবে এখানকার , আদবকায়দা,হাবভাব ও সংস্কৃতির সাথে। শিখতে হবে ভাষা, আত্বস্ত করতে হবে নিয়মনীতি।
এখানেই প্রতিষ্ঠিত হতে চান , দেশে ফিরবার ইচ্ছে তাঁর নেই ।






  তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন এখানে আর বিয়ে করেছিলেন এক ভারতীয় নারীকে। অবশ্য এই নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক আছে, 
একদিন চার্নক নদী তীর ধরে হাঁটছিলেন। হঠাৎ দেখলেন, এক অনিন্দ্যসুন্দরী তরুণীকে সতীদাহের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মেয়েটির রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন বিয়ে করেন, নাতুন নাম দেন মারিয়া ।
1695 সালে চার্নকের সাধারণ কবরের উপরে তার জামাতা একটি সমাধি নির্মিত হয়েছিল। এটি এখনও সেন্ট জন'স চার্চের কবরস্থানে আছে।



আমার তোলা সমাধির আসল ছবি




  চার্ণক কলকাতা প্রতিষ্টাতা করেছিলেন, না করেন নি, সেটা ইতিহাস বলবে। কিন্তু এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে যে তরুণ এদেশে এসেছিলেন, ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এখানের কন্যা,সংসার পেতেছিলেন এই শহরেই ,যে শহরের আজও তিঁনি ঘুমিয়ে আছেন।

শহর তাঁকে ভোলেনি ।




কলকাতা এখন মহানগর, জঙ্গল এখনো আছে তবে কংক্রিতের, কুমির, বাঘ, ডাকাত সবই আছে, তবে অন্য রূপে।
পুরানো স্মৃতি-স্থাপত্য আমাকে টানে,তখন কলেজে পড়ি, 
চার্ণকের সমাধি দেখতে ছুটে গেছিলাম, একা ।
 জায়গাটা এখনো সমান ভাবে নিঝুম, কোলাহল মুক্ত ,কলকাতার মধ্যে অন্য এ যেন এক অন্য কলকাতা।  সবুজ গাছ আর পাখির ডাক, আগের মতন , কেউ ডাকারও নেই ,বিরক্ত করার নেই ,সময় যেন থমকে আছে । সমাধীর সামনে দাড়িয়ে মনে আসছিল চার্ণকের গল্প ।
 ভাবছিলাম হটাৎ ঘুম থেকে উঠলে চার্ণক কতটা অবাক হবেন, কি ভাববেন  ??
 আজ বদলে যাওয়া কলকাতা কে দেখে  ???


                                      সমাধির ভিতরে
 তোলা ছবি


চার্ণকের সমাধির সে দিন যা দেখেছিলাম, 
চেষ্টা করলাম আঁকার মাধ্যমে তুলে ধরার 



সমাধি অনুকরণ করে আঁকা







If You would Like to Give any Feedback Or Suggestions,
 Then Please Feel Free to Email Me.
subhra2579@ gmail.com


ধন্যবাদ , 
R.subhro




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফাস্ট ফুড, চাউমিন বা ন্যুডলস। Health is Your Wealth. 🥣

🌍🌏 ধুবুলিয়া ঃঃ THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR2 [ পর্ব =১৫ ]

THE FORGOTTEN AIRPORT OF WW 2 পর্ব = ১৪🧧