' জ্যাক দা রিপার ' কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারের আসল পরিচয়।



               ::পাঠ অনুভূতি ::

 
 🎗️       বইয়ের     নাম   ::
' জ্যাক  দা  রিপার '
কুখ্যাত  সিরিয়াল  কিলারের  আসল  পরিচয়।
লেখক    ::   কাজল  ভট্টাচার্য।
প্রচ্ছদ    ::   কৃষ্ণেন্দু  মন্ডল।
প্রকাশনা    ::  অরণ্যমন।
পৃষ্ঠা সংখ্যা   ::  ২০৬
প্রথম প্রকাশ।   ::  সেপ্টেম্বর ২০২১.


                                   



🀄   সম্প্রতি শেষ   করলাম   কাজল  ভট্টাচাৰ্য এরলেখা
জ্যাক দা   রিপার,  কুখ্যাত  সিরিয়াল কিলার এর   আসল   পরিচয় ।
টাইটেল  পড়েই   অনুমান  করা  যায়  বইটি   19th সেঞ্চুরির   পৃথিবী   বিখ্যাত  হত্যাকারী  ' জ্যাক দা রিপারের  নিঃসংস  কর্মকাণ্ডের  উপরের লেখা ।
             প্রথমেই   আন্তরিক  অভিনন্দন  এমন  একটা  গবেষণালব্ধ বই  আমাদের  হাতে  তুলে দেবার    জন্য  । এই  কুখ্যাত সিরিয়াল  কিলার গল্প অনেক  শুনেছি , কিন্তু এই প্রথম বিষয়টি স্ববিস্তীত  ভাবে   উপভোগ   করতে পারলাম। জানতে পারলাম  এই হত্যাকারির  হাতে নিঃসংস   ভাবে খুন  হয়েছিল  মোট   ১১ জন ,  যারা  সবাই  ছিলেন মহিলা ।  ( যদিও প্রকৃত  সংখ্যা নিয়ে যথেষ্ট  বিতর্ক   আছে ]

     

এই  নিঃসংস  কর্মকাণ্ড   কাঁপিয়ে  দিয়েছিলো   গোটা  ইংল্যান্ড   বিশ্বের  মানুষকে  । পৃথিবী    প্রথম  পরিচিত  হয় ' সিরিয়াল  কিলার '  শব্দের  সাথে ।
      আজ   এতো   বছর   অতিবাহিত  যাবার   পরেও এই   কুখ্যাত  হত্যাকারী   জ্যাক দা রিপার  আসল    পরিচয়  এবং  তার   হত্যাকান্ডের  পিছনে    আসল    কারণ   কি  ছিলো  দুটোর কোনটি ই পাকাপোক্ত   ভাবে  জানা    যায়    নি । তাই   জ্যাক   দা  রিপারের    আকর্ষণ   ১৩৪   বছর পরে  আজও    স্বমহিমায়    অটুট ।
 তাকে  নিয়ে   লেখা  হয়েছে   অসংখ্য   বই,   হয়েছে  ডকুমেন্টারি,  মুভি  ও  ওয়েব - সিরিজ ।
তার   নামে   নির্মিত   হয়েছে মিউজিয়াম 
Jack  The  Ripper   Museum লন্ডন  শহরের  অন্যতম  একটা   আকর্ষণ 

                      

          


তার  হত্যাকরার  জায়গা গুলো   আজও   পৃথক  পৃথক   ট্যুর  এন্ড  ট্রাভেলস  গ্রুপ   লন্ডনের টুরিস্টদের   ঘুরিয়ে    ঘুরিয়ে  দেখায় ।  এই   রকমের  একজন  নৃসংস খুনি   হত্যাকারীকে    নিয়ে    আজও  মানুষের    মধ্যে   এই  আকর্ষণ ও  উদ্দীপনা অবিশ্বাশ্য । 
  এটা   হয়তো   পৃথিবীর   কোন  হত্যাকারীকে   নিয়ে  হয়  নি !

🎴     সংক্ষেপে   গল্প   প্রসঙ্গে ::

🌞     লন্ডন একটা  প্রাচীন  শহর,  রোমানদের  হাতে  এই  শহরের   পত্তন । আমাদের গল্প  শুরু সেভেন্টেন্থ  সেঞ্চুরিতে । এই  সময়  লন্ডনের  শহরের  বাইরের   [ পূর্ব দিকের ]  অত্যন্ত  জঘন্য দুটো  জায়গা হলো  হোওয়াটচ্যাপেল  এবং  স্পিটালফিল্ড
যেটা  তখন পরিচিত  ইস্ট এন্ড অফ দা  সিটি  হিসাবে ।
এখানে ইউরোপ বিভিন্ন দেশ  থেকে আগত হতদরিদ্র  ও বঞ্চিত  মানুষ  অসাস্থ্যকর পরিবেশে  ঘেঁষাঘেঁসি  করে কোন রকমে  দিন কাটায়।
আইন  শৃঙ্খলার পরিস্থিতিও এখানে  খুব    খারাপ , রাত  নামতেই  পুরো এলাকা চলে যায়  দুষ্কৃতী    ও    দেহপসরিণীদের হাতে । এখানকার  বেশিরভাগ  মানুষের ই নিজস্ব    কোন   স্থায়ী    ঠিকানা  নেই   ।  
   চুরি -ছিনতাই, গ্যাং-ওয়ার এখানে খুব  স্বাভাবিক   ব্যাপার। ।
 
       

     
এই     রকমের পরিস্হিতিতে ১৮৮৮  সালের ২  এপ্রিল    হোওয়াটচ্যাপেল এলাকাই    খুন    হলেন    এমা স্মিথ, রিপারের  প্রথম     শিকার ।
তারপর   একে    একে   মারথা   ট্রাবম,  মেরি আন এবং    আরো     অনেকে।
প্রতিটি   হত্যা   অনন্ত     ভায়ানক,     পাশবিক    শিউরে      উঠার     মতন।
প্রাথমিক    ভাবে    বিষয়    গুরুত্ব    না     পেলেও     পরবর্তী    সময়    তদন্তে     সি. আই. ডি      থেকে    স্কটল্যান্ড    ইয়ার্ড   সবাই কে  নামানো   হলেও কেউ    খুনিকে    ধরতে    পারে    না   ।   
 একের    পর    এক  হত্যাকাণ্ড     চলতেই থাকে   ।
সাধারণ    মানুষের    মধ্যে    খুব     দ্রুত  আতঙ্ক    ছড়িয়ে     পরে,
চারপাশে  নানা   ধরণের      গুজব ।      
খবরের  কাগজে   তীক্ষ্ণ    ভাষায়     সরকারের  সমালোচনা    শুরু    হয়।
স্থানীয়   ব্যাবসাহী    সমিতি  সরকারের    উপরের    ভরসা  না    করে     নিজেরাই   একটা  ভিজিলেন্স কমিটি   গঠন    করেন  । 
    খুনির   সংবাদ    দিলে    পুরস্কার  দেওয়া  হবে    ঘোষণা   করা     হলো।
সাধারণ মানুষের  সাথে  সরকারের    বিরোধ  যখন     তুঙ্গে,    সেই    সময় বিখ্যাত      একটা      সংবাদ  পত্রের   অফিসে চিঠি   পৌঁছায়   যেটা  লিখেছে  হত্যাকারী স্বয়ং , সেখানে নিজের    নাম  জানিয়েছে ' জ্যাক   দা  রিপার '


    এই  চিঠির  নাম পরবর্তী  সময়  বিখ্যাত   হয়ে  যায়    ।
রানী    ভিক্টোরিয়া ও  শিউরে  উঠেছিলেন  রিপারের  হত্যা  করার  ধারাবাহিক    পদ্ধতির    কথা     জানতে     পেরে।
সব    মিলিয়ে  একটা  জমজমাট   গল্প।
যত বেশি     পাতা  উল্টাবেন  ততো  বেশি গল্পের   উত্তেজনা  অনুভব    করবেন।



🧧    আমার   ভালোলাগা ::

 লেখক   প্রতিটি   খুনের   স্পষ্ট  বিবরণ,  সমসাময়িক   পারস্পরিক    পরিস্থিতি,    খুন     হয়েযাওয়া     হতভাগিনীদের   পরিচয় , ঘটনার   প্রকৃতি  স্থান  [ ছবি   সহ ]
সাক্ষীদের   বয়ান,    লন্ডন    শহরের     বর্ণনা,   ম্যাপ   দিয়ে    যেভাবে   ফুটিয়ে      তুলেছেন,    যা এক     কোথায়   অসাধারণ।
আপনি  মনে    মনে    পৌঁছে       যাবেন    ঠিক   সেই    জায়গায়।
এ     এক     অন্য    অচেনা     লন্ডন,   যেখানে    চারপাশে  অন্ধকার ,   খুপচি   ঘর  ,     নেই    কোন     সামান্য     নাগরিক    পরিষেবা।
এ    যেন    এক    অন্য    পৃথিবী   ।  আমাদের    চির  পরিচিত  শার্লক   হোমসের    লন্ডন     না ।


      জ্যাক   দা   রিপার     প্রমান   করে   দিয়েছিলো  যে   ইংরেজ   জাতি   ভারতবর্ষকে     দুইশ    বছর     ধরে    রাজত্ব     করে    ছিলো  ।
যে   স্কটল্যান্ড   ইয়ার্ড    ছিলো   ভারতীয়দের     কাছে     যম ,    সেই     ইংরেজ   পুলিশ  আসলে  কতটা অপদার্থ ।


                    


🎖️       ধণ্যবাদ   সবাই    কে  ।।


      ভালো থাকুন,
সুস্থ থাকুন
আর বেশি বেশি করে বই পড়ুন।।


AUTHORITY OF
RAINBOW SUBHRO SCAPBOOK .

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফাস্ট ফুড, চাউমিন বা ন্যুডলস। Health is Your Wealth. 🥣

🌍🌏 ধুবুলিয়া ঃঃ THE FORGOTTEN AIRPORT OF WORLD WAR2 [ পর্ব =১৫ ]

THE FORGOTTEN AIRPORT OF WW 2 পর্ব = ১৪🧧