🖼️ The Mona Lisa :: Mystery & Much more [ আজকে তৃতীয় পর্ব ]

Monalisa ::
Mystery & Much more

                                

   [ আজকে তৃতীয় পর্ব ]


⛳️ BEHIND THE KYRA ::
The Art Gallery
4.45 P. M.


মানে এটা কিভাবে সম্ভব ??
মাথা চুলকে প্রশ্ন করলো অর্ক ।
মানে এতো বড়ো গ্যালারি আর এতো শক্ত সিকিউরিটি চোখে ফাঁকি দিয়ে মোনালিসা জাস্ট ভ্যানিশ হয়ে গেলো, আর হলো তো এমন ভাবে, যে তার আর কোন হদিস নেই । বিশ্বের তাবড়-তাবড় গোয়েন্দা-পুলিশ কেউ কোন খোঁজ পেলো না ? আর চোর ও সবার চোখে ফাঁকি দিয়ে ভিতরে ঢুকলো কি ভাবে ? কোন দারোয়ান বা সিকিউরিটি কি তাকে চেক করলো না ? ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত না ?  অর্কর চোখেমুখে বিশ্বয়ের চিহ্ন স্পষ্ট।


প্রায় ঘণ্টা দুয়েক অতিক্রান্ত হয়েছে ওরা ART GALLERY  পিছনের জোড়া পুকুরের সামনে কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে। গ্যালারির এই দিকটা বেশ নিরিবিলি ও শান্ত । মাঝে মাঝে পাশের রাস্তায়  হুস-হাস করে কিছু গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে, পুকুরের জলে হাঁস মাঝে মাঝে  ডুবছে আর উঠছে। বিকেলের ঠান্ডা বাতাসে চারপাশটা শীতল ও মনোরম হলেও ভিতরে ভিতরে কিছুটা অস্থির হয়েউঠেছে ওরা । ব্যাপারটা স্বাভাবিক, গল্পটা এখন পর্যন্ত যতটা শুনেছে তাতে ওদের কৌতূহল আরও বেড়ে গেছে। তাই বাকিটা শোনার জন্য ওরা উদগ্রীব। ওদের সবার দৃষ্টি ভিক্টরদার উপরে ,
ভিক্টরদার পুকুরের শান্ত জলের দিকে তাকিয়ে বলল, "Possible , Very Much Possible. চোর যদি বাইরের না হয়ে ভিতরের কেউ হয় তাহলে ? মানে বলছ ,ঘরশত্রু বিভীষণ ? নিশো বলে উঠলো । বিভীষণ-টিভীষণ না, এই কাজটি যিনি করেছিল , মানে আজকের এই গল্পের নায়ক " ভিঞ্চিচেঞ্জও পেরুজ্জা " ছিলেন লুভরের একজন অস্থায়ী কর্মী । তাই মিউজিয়ামের ভিতরে ঢুকে এই চুরি করা  তারপক্ষে ছিলো তুলনামূলক সোজা কাজ। তবে এটা বিক্রি করে পয়সা কমানোর জন্য তিনি এই কাজটা করেন নি, এই চুরি করার পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিলো একদম আলাদা,

তাহলে, এই চুরিটা তিনি কেন করলেন ? রিমঝিম বলে ।  সাইকো-টাইকো ছিলেন বোধহয় গম্ভীর কণ্ঠে শন উত্তর দেয় । আজ্ঞে না, তিনি না ছিলেন কোনো সাইকো, না  কোনো পেশাদার চোর,না কোন আন্টিক দ্রবের চোরাচালান কারী। তিনি ছিলেন ইতালীর দুমেনজা শহরের সাধারণ একটা পরিবারে জ্যৈষ্ঠ পুত্র। তাদের পরিবারিক পেশা ছিলো পেন্তিং  ডেকোরেশনের,  মানে তারা দামি দামি  চিত্রগুলোকে সুন্দর করে  ডেকোরেশন করতেন ।  আর বাড়ির বড়ো ছেলে হবার জন্য উপার্জনের ভার ছিল তার উপরে ,তিনি প্ৰতি বছর দেশ ছেড়ে প্যারিসে আসতেন অভিবাসী কর্মী ভিসাবে একটু অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় ।

                       

                                    

                                                   ভিঞ্চিচেঞ্জও  পেরুজ্জা .

এখন প্রশ্ন হচ্ছে,  যদি বিক্রি না করেন তাহলে  তিনি  চুরি করলেন কেন ?  শুধু মাত্র  নিজের কাছে লুকিয়ে রাখার জন্য ? কিন্তু তাতে কি লাভ ?  কাউকে যদি দেখানোই না যায় তাহলে মোনালিসার মূল্য থাকল কোথায়ে ?  কি তাই না ? ভিক্টর দা মুচকি হেসে বলে ।  ঠিক , সম্মতি দিয়ে নিশো মাথা নাড়লো ।  তবে ?  আসলে এই চুরি করার পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিলো একদম আলাদা । তার ধারণা ছিলো মোনালিসা আসলে ইতালির সম্পদ । ইতালি থেকে চুরি করে মোনালিসাকে ফ্রান্সে নিয়ে আসেন নেপোলিয়ন বোনাপারট । সুতরাং মোনালিসা ফিরিয়ে আনা কোনো চোর্য কার্য নয় বরং একটা গ্লোরীফ্রাই কাজ দেশপ্রেম। মানে চোরের উপরে বাটপারি । Actually It Was a Patriotic Act to him, To Bring Back Mona Lisa To Home. তিনি ভেবেছিলেন এর ফলে জনগন এতটাই খুশি হবে সে ইতালিতে জাতীয় বীরের সন্মান পাবেন ।

তার এই ধারণাটা কি ঠিক ছিলো ?  শন জানতে চাইলো।

                        

    রাজা প্রথম ফ্রান্সিস

দুপাশে মাথা নাড়লো ভিক্টোরদা, উমহ, এটা ঠিক, নেপোলিয়ান তার রাজত্ব কালে ইতালি থেকে অনেকে মূল্যবান শিল্পসামগ্রী ফ্রান্সে এনেছিলেন কিন্তু মোনালিসাকে নয় । এটা ফ্রান্সে আসে নেপোলিয়নের অনেক আগে ১৫১৯ সালে । তাই নাকি ? কি ভাবে ? লিওনার্দো দা ভিঞ্চি জীবনের শেষ তিন বছর ফ্রান্সের রাজপরিবারের আশ্রয়ে ছিলেন, এই সময়ে তিনি এটা বিক্রি করেন রাজা প্রথম ফ্রান্সিসকে, তখন থেকেই মোনালিসা ফ্রান্সের রাজ পরিবারের সম্পত্তি ।প্রথমে তাকে রাখা হত ফন্তেনব্লু রাজপ্রাসাদে কিন্তু ১৭৯৯ সালে ফ্রেঞ্চ রেভুল্যুশনের ফলে ফ্রান্সে রাজতন্তের অবসান হলে মোনালিসা জনগনের সম্পত্তিতে পরিণত হয় এবং তারপর থেকেই এটা লুভ্রুরে প্রদশিত হতে শুরু হয় । যদিও তখন মোনালিসা এতটা বিখ্যাত হয়ে ওঠেনি ।তার জন্য আলাদা কোন নিরাপত্তা ছিল না, মিউজিয়ামের অন্যান্য ফেমাস চিত্রগুলোর সঙ্গে একসাথেই রাখা হত মোনালিসাকে।


♦️🧧  ভিনচেঞ্জজো পেরুজ্জাঃঃ

১৯০০ শতকের প্রথমদিকে ফ্রান্সে ব্যাপক মূল্যবির্ধ ,বেকারত্ত, ও অন্যান্য সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যাগুলো সাধারন জনগনের মধ্যে সৃষ্টি করে ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ও গণ্ডগোলের । সাধারন মানুষ তিতিবিরক্ত, তারা প্রতি মুহুত্তে বিভিন্ন হিংসাত্মক কাজের দ্বারা সরকারকে নাস্তানাবুদ করছে , সরকারকেও পিঠ বাঁচার জন্য নানান কৌশল খাটাতে হছে। দিনের  পরদিন পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে । 

               

 

               লুভ্রুর  মিউজিয়াম ১৯১১  

                

লুভ্রুরে কর্তৃপক্ষ ও মিউজিয়ামের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ,তাদের মনে সুতীব্র ভয় বাসা বেঁধেছে ।  যদি ক্ষিপ্ত বিক্ষোভকারীরা মিউজিয়ামের উপরে আক্রমন করে  তাহলে ? না ,  একটা উপায়তো বের করতেই হবে । তাই তারা সিধান্ত  নিলেন  সুরক্ষার জন্য  মিউজিয়ামের সব আন্তিক শিল্প সামগ্রী বিশেষ করে চিত্রগুলো মোটা কাঁচের ফ্রেমের দিয়ে ডেকোরেশন করে ঘিরে ফেলা হবে ।  আর এই কাজের জন্য যাদের নিয়োগ করা হল তাদের মধে একজন ছিলেন আমদের এই গল্পের নায়ক ভিনচেঞ্জজো পেরুজ্জা ।  আগেই বলেছি এই রকমের পেন্তিং ডেকোরেশনের কাজ ছিলো তাদের পারিবারিক পেশা,  আর অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য তিনি নিয়মিত প্যারিসে আসতেন ।  সুতরাং এই ভাবেই লুভ্রুরে প্রবেশের সুযোগ হয় ভিনচেঞ্জজো পেরুজ্জার । দীর্ঘস্বাস ফেললো রিমঝিম, এই পদক্ষেপ যে কতবড়ো ভুল সেটা মিউজিয়ামের কর্তৃপক্ষ ঘুনাক্ষরেও ভাবতে পারেননি।

" হুম " মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো ভিক্টরদা।

          ক্রমশঃ

[ আগামী পর্বে সমাপ্ত ]

🧧 ১৯১১ সালের অগাস্ট মাস, প্যারিসের লুভ্রুর মিউজিয়াম থেকে হটাৎ করে হারিয়ে গেল লিওনার্দো দা-ভিঞ্চির আঁকা মাস্টারপিস ছবি MONA LISA .

MONA LISA র এই আকস্মিক হারিয়ে যাবার সারা বিশ্বে তুমুল আলোড়ন ও তোলপাড় সৃষ্টি করলো ।
কারণ এ তো শুধু একটা ছবি নয় ,
এটা একটা ইতিহাস, একটা উন্মাদনা ও আবেগ ।

শেষ পর্যন্ত কী ভাবে ঊদ্বার হলো MONA LISA ??

কে , বা কারা ছিল এই পুরো ঘটনার পিছনে ??

এইসব নিয়ে আমাদের আজকের এই গল্প ।।

ভালো লাগলে কম্মেণ্ট করে জানাবেন ।

 

ধন্যবাদান্তে  

𝓐𝓾𝓽𝓱𝓸𝓻𝓲𝓽𝔂 𝓞𝓯

🆁︎. 🆂︎🆄︎🅱︎🅷︎🆁︎🅾︎