ওয়েব_সিরিজ :: #কাইজার ,The Addict Detective Of Gaming . পরিচালনা : তামিম নূর।
🃏 আমার অনুভূতি ::
ওয়েব_সিরিজ :: কাইজার ।
[ The Addict Detective Of Gaming ]
পর্ব :: ০৯
রিলিজ :: ৮ জুলাই, ২০২২
অভিনয় :: আরফান_নিশো, মুস্তাফির নূর ইমরান, ইমতিয়াজ বর্ষণ, দীপার্ণিতা মার্টিন, শতাব্দী ওয়াদুদ, আহমেদ রেজা রুবেল ও আরো অনেকে।
পরিচালনা : তামিম নূর ।
⏳️🎖️ বন্ধুরা খুব সম্প্রতি দেখলাম একটা চমৎকার বাংলা ভাষায় নির্মিত ওয়েব-সিরিজ " কাইজার " সিরিজের টানটান গল্প, অনবদ্য অভিনয়, এক্সসিলেন্ট সিনেমটোগ্রাফি, দারুন স্টোরিটেলিং, সব মিলিয়ে একটা দারুন একটা ডিটেকটিভ অ্যাকশন-থ্রিলার এবং দর্শক হিসাবে আপনাকে মুগ্ধ করবে । মোট ৯ পর্বের ডাবল-মার্ডার মিস্ট্রি কেস আপনাকে এতটাই আকৃষ্ট করবে যে পুরো সিরিজটা শেষ না করে উঠতেই পারবেন না। সিন্ডিকেট রাজ, আন্ডারওয়ার্ল্ড, মাদক দ্রবের চোরা কারবারি সব মিলিয়ে
একটা রুদ্ধশ্বাস জমজমাট গল্প, যারা থ্রিলার পছন্দ করেন তাদের তো অব্যশই ভালো লাগবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা পরিচালক তামিম নূরকে, হৈ_চৈ প্লাটফমে এটা তার প্রথম কাজ।
🎴 গল্পের সংক্ষিপ্ত সার ::
ঢাকা শহরের অভিজাত এরিয়ার একটা বহুতল আবাসনে এক রাতে নৃসংস ভাবে হত্যা করা হয় জয়া ও সাবা নামে দুইজন অবিবাহিত যুবতী মেয়ের। খুন করার পদ্ধতি খুবই নিষ্ঠুর,কোল্ড ব্লাল্ডেড. এই ডাবল মার্ডার কেস নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এই তদন্তের জন্য ডাকা হয় হোমিসাইট ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্তের জিনিয়াস ও ইন্টেলিজেন্ট অফিসার কাইজার চৌধুরীকে [ অভিনয়ের আরফান নিশো ]
যিনি একজন অসাধারণ ডিটেক্টিভ হওয়া সত্ত্বেও ব্যাক্তিগত জীবনে পুরো ঘেঁটে ' ঘ '. বেশিরভাগ সময়ে সে সাসপেন্ড হয়ে থাকে, স্ত্রী তাকে ছেড়ে দিয়ে তার ছেলেবেলার ঘনিষ্ট বন্ধু অম্লানকে [ অভিনয়ে মুস্তাফির নূর ইমরান ] বিয়ে করে নিয়েছে, সঙ্গে করে নিয়ে গেছে তার একমাত্র মেয়েকেও।
চাকরী নেই পরিবার নেই তাই কাইজার মানসিক ভাবে ডিপ্রেসেড, তার এই একাকিত্বে একমাত্র ভালোবাসা ভিডিও গেম। অন্তু নামে এক অল্প বয়সী ছেলে [ অসাধারণ অভিনয় করেছে ] তার গেম পাটনার, তারা সারাদিন অনলাইন গেম খেলে, টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হবার স্বপ্ন দেখে ।
ডাবল মাডার মিস্ট্রি সল্ভ করার জন্য ডিপার্টমেন্টে কাইজারকে ফিরিয়ে আনা হয় । সে তদন্ত শুরু করার সাথে সাথেই তার উপরের পরিকল্পিত হামলা হয়। হুমকি দেওয়া হয় কেসটা ছেড়ে দেবার জন্য। বোঝা যায় অত্যন্ত শক্তিশালী কিছু মানুষ এই হত্যার সাথে যুক্ত আছেন ।কাইজার কিন্তু হাল ছেরে দেয় না, সে তার নিজের মতন তদন্ত করতে থাকে। আর তদন্ত যত এগোতে থাকে গল্পের প্রয়োজনে নতুন নতুন চরিত্রের আগমন ঘটতে থাকে । জানা যায় নিলয় নামে একজন এই ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝে ই আসতো, কিন্তু হত্যা পর থেকেই সে পুরোপুরি নিখোঁজ ।
এই একই সময়ে গল্পে 'ব্যারিস্টার' নামে এক অদ্ভুত রহস্যময় চরিত্রের আবির্ভাব হয় [ অভিনয়ে ইমতিয়াজ বর্ষণ ] তার আচার ব্যবহার , হাবভাব কথা-বার্তা খুব নরম ও ধীরস্থির এবং স্টাইলিশ, যা সামনের মানুষ মুগ্ধ করে । কিন্তু তার মোটিভ কি সেটা পরিষ্কার নয় ।
দুটো ঘটনা পাশাপাশি চলতে থাকে একদিকে খুনের তদন্ত অন্যদিকে কাইজারের ব্যাক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন । গল্প ধীর গতিতে এগোলেও আপনি কখনই বোর ফিল করবেন না । এক সময় কাইজারের একমাত্র মেয়েকে কিডন্যাপ করা হয়। তদন্ত চলতে থাকে, গল্প আরো বেশি জট পাকাতে থাকে। উঠে আসে যায় ঢাকা শহরের জনপ্রিয় রি-হাব সেন্টার ও একজন নামকরা সাইকাটিস্ট নাম ।
জানা যায় আরো একজন সাসপেক্ট বাচ্চু ভাই নামে একজন অসাধু ব্যাবসাহী কথা । [ অভিনয়ের শতাব্দী ওয়াদুদ ] কাইজারকে তদন্তে সাহায্য করার জন্য CIS থেকে এক মহিলা অফিসার পাঠানো হয় [ অভিনয়ের দীপারনিতা মার্টিন ]
কিন্তু কে খুন করলো ? আর কেন করলো ?
কারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত ?
এদের আসল উদ্দেশ্য কি ?
এদের বস কে ?
এরকম নানা প্রশ্ন দর্শকের মনে জমা হতে থাকে।
🎖️ আমার ভালোলাগা ::
ভালোলাগা কথা বলতে গেলে প্রথমেই মাথায় আসে অভিনয়ের কথা, আরফান নিশো এককথায় অ-সাধারণ, কাইজার চরিত্রের বুদ্ধিমত্তা, ডিপ্রেশন, একাকিত্ব থেকে ভিডিও গেমের প্ৰতি আসক্তি যেভাবে তিনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন তা অতুলনীয়। যত দেখবেন ততই কাইজারের জীবনের দুঃখ, কষ্ট সাথে একাত্ত হয়ে যাবেন। কাইজারের অভিব্যক্তি, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ডায়লক থ্রুয়িং সব কিছুই আপনাকে মুগ্ধ করবে।
কাইজারের সাংবাদিক বন্ধু অম্লানের চরিত্রে মুস্তাফির নূর ইমরানের অভিনয় ফাটাফাটি। এখানে এমন কিছু কিছু দৃশ্য এমন আছে যেটা গল্পটা শেষ হয়ে যাবার পরেও আপনার মনে বড়ো দাগ কেটে যাবে, আপনার মনে আবেগ সৃষ্টি করবে । যেমন কাইজার এবং তার মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক তাদের মধ্যে কথা বার্তা, ভালোবাসা ।
এছাড়া কাইজার তার বৌ ও বন্ধু অম্লানের মধ্যে পারস্পরিক ক্যামেস্ট্রি , এই সবই এই গল্পের অন্যতম মূল আকর্ষণ ও সম্পদ।
ব্যারিস্টার চরিত্রের ইমতিয়াজ বর্ষণের প্রেসেন্টেশন ও সাবলীল অভিনয় মনে দাগ কেটে যাবে। এছাড়া লেডি পুলিশ অফিসার দেপারনিতা মার্টিন, লোভী ব্যাবসাহির চরিত্রে শতাব্দী ওয়াদুদ সবাই অসাধারণ। আসলে অনেকে বাঘা বাঘা অভিনেতা যদি এক গল্পের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাহলে বোধহয় এই রকমের মাস্টারপিস সিরিজ তৈরী হয় ।
এইজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ পরিচালক তামিম নূরকে। তিনি স্বীকার করেছেন ফেলুদা, ব্যোমকেশ ও তিন গোয়েন্দার একজন মুগ্ধ ভক্ত, তাইতো সিরিজের গল্পের মধ্যে ফেলুদা, তিন গোয়েন্দারা বারবার ফিরে আসে নানা ভাবে । যেমন কাইজার তার মেয়েকে জন্ম দিনে উপহার দেয় ' পাহাড়ে ফেলুদা '।
আবার সে পরে আবিষ্কার করে অম্লান ও ঐ একই বই উপহার দিয়েছে তাকে।
এই ভাবেই গল্প নিজের মতন এগিয়ে চলে ।
🌿 আমার ব্যাক্তিগত রেটিং - ৮.৭/১০ ।
সবাই ভালো থাকুন,
সুস্থ থাকুন।





মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন